ময়মনসিংহ নগরে পাঁচ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ও ফয়জুর রহমান মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় নগরের মানুষকে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নগরের পাটগুদাম থেকে কাচারি সড়কে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পথচারী ও সাধারণ মানুষজনকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিশু ধর্ষণ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত কয়েকদিন আগে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার হন শিক্ষক মাওলানা আজিজুল হক। কিন্তু মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম অভিযোগ তদন্ত না করেই আজিজুল হকের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে মুফতি মোফাজ্জল হককে শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করেন এবং মুফতি সারোয়ার হোসেনকে উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ ও পরিচালনা কমিটি থেকে সরিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা শনিবার সকাল থেকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে ডিসির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সাড়া না দেওয়ায় সকাল ১০টায় মাদ্রাসা সংলগ্ন পাটগুদাম-কাচারি সড়কে অবস্থান নিয়ে ডিসির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘একটি মহল বহিষ্কৃত শিক্ষক আজিজুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের বড় হুজুরের (আব্দুল হক) বিপক্ষে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে ডিসির কাছে মূল ঘটনা পাশ কাটিয়ে যায়। এতে ডিসি প্রভাবতি হয়ে শিশু নির্যাতনকারী বহিষ্কৃত শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে মুফতি মোফাজ্জল হককে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করেন। একইসঙ্গে উপাধ্যক্ষ সারোয়ার হোসেনকে অপসারণ করেছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক আমাদের হুজুরদের শাসিয়ে অপমান করেছেন। অবিলম্বে ডিসি তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।’
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, মাওলানা আব্দুল হক নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠানে আধিপত্য ধরে রাখতে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ একটি পক্ষের। মূলত এ কারণেই বেশ কয়েক দফা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে মাওলানা আব্দুল হকের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এসব বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম এবং মাওলানা আব্দুল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’

















