তিন দিন আগে সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলের নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে মেঘনার ভাঙনে ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জের খেঁজুর গাছিয়া এলাকায় প্রায় আড়াই শ’ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্র ও শনিবারের বৃষ্টি এবং মেঘনায় জোয়ারের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে নতুন করে ভাঙন ধরেছে। এতে উপজেলার হাজারীগঞ্জ এবং জাহানপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা না নিলে যেকোনও সময় বাঁধের বাকি অংশ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বসত ভিটা, ক্ষেতের ফসল ও মাছের ঘের।
হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মাওলানা মুহাম্মদ ইছহাক ও মো. সিরাজ হাওলাদারসহ অনেকের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে মেঘনার ভাঙনে মে মাসে বাঁধটির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দেখে যান। পরে ভেকু দিয়ে অল্প কিছু মাটি ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তখন বাঁধের কাজ ঠিকভাবে করা হলে এখন বাঁধের এত বড় ক্ষতি হতো না।
এদিকে, মেঘনার ভাঙনে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সেখানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। রবিবার সরেজমিন দেখা গেছে, জিও ব্যাগের কাপড় দিয়ে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, নদীতে জোয়ার থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না, ভাটার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ চরফ্যাশন কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাফ উদ্দৌলা জানিয়েছেন, গত মে মাসে প্রথমে বাঁধটি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ কাজের জন্য দুটি প্যাকেজে (২৮+১৮) ৪৬ লাখ টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করতে হবে। বৃষ্টি কমলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ‘খেজুরগাছিয়া বাঁধে জিও রোল দিয়ে ভাঙা অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি কমলে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মাটি ভরাট করে তার সামনে ড্যাম ফেলে ভাঙন রোধ করা যাবে।’