ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কেউ নিজ কিংবা দলের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না। আপনারা যারা পিআর বোঝেন না, তারা রাজনীতি করতে আসছেন কেন? আপনাদের রাজনীতি করার অধিকারই তো থাকতে পারে না।’
সোমবার (২৮ জুলাই) বিকালে চুয়াডাঙ্গা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সুন্দর একটি দেশ গঠন করার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিগত দিনে নিজের স্বার্থে, দলের স্বার্থে যখন মন চাইছে তখনই তারা সংবিধান পরিবর্তন করেছে। এখন সংবিধান যেন ইচ্ছে করলেই নিজ এবং দলের স্বার্থে তৈরি করতে না পারে। সুযোগ এসেছে নির্বাচন যে পদ্ধতিতে ছিল তার পরিবর্তন করার। সেই নির্বাচন পরিবর্তন পদ্ধতি হলো পিআর। পিআর ভোটে প্রতিটি ভোটারের মূল্যায়ন হবে। বারবার ইচ্ছে করলেই এই ফ্যাসিস্ট চরিত্র এককভাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ে সংসদে যেতে পারবে না।’
চরমোনাই পীর বলেন, ‘আপনি বলেন পিআর বোঝেন-ই না, খায় না মাথায় দেয়। আপনারা পিআর পদ্ধতি বোঝেন না, তাহলে রাজনীতি করতে আসছেন কেন? আপনাদের রাজনীতি করার অধিকার বাংলার মাটিতে থাকতেই পারে না। আসলে বোঝেন সবই, কিন্তু মূল ব্যাপার হলো এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে বাড়ি তৈরি করা যাবে না। যারা নিজ স্বার্থে রাজনীতি করে তারাই পিআরের বিরোধিতা করে।’
রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশকে অগ্রাধিকার না দিয়ে নিজ স্বার্থ বা দলের স্বার্থে ছেঁড়া পুস্তকের তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের সংবিধান। যার যখন মন চেয়েছে তখনই সেভাবে সংবিধান পরিবর্তন করেছে। কারণ, একটি নিয়ম রয়েছে যে ৩৫-৪০ শতাংশ আসন পেলেই তারা সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে। অথচ ৬০ শতাংশ মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বিশ্বের প্রায় ৯১টি দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়। পিআর নির্বাচন হলে হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দমন করা যাবে না, যেখানে সেখানে রাস্তায় নামলে খুন করা যাবে না। তাই এখনই চারদিক থেকে আওয়াজ তুলতে হবে, এই দেশে আর চাঁদাবাজি হতে দেওয়া যাবে না। এই দেশের টাকাকে আর বিদেশে পাচার করতে দেওয়া যাবে না।’
ইসলামী আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিবের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমীন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান সজীব, হেফাজতে ইসলামের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুস সামাদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সমন্বয়কারী আমির হোসেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ তুষার ইমরান সরকার।