কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ‘বন্ধুদের হাতে নিহত’ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারী জোবায়ের আমিন হত্যাকাণ্ডের এক বছর পার হলেও আসামিদের গ্রেফতার কিংবা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি পুলিশ। জোবায়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চিলমারীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নিহতের স্বজন, এলাকাবাসীসহ বন্ধু ও জুলাইয়ের সহযোদ্ধারা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মোড়ে চিলমারী-কুড়িগ্রাম সড়কে বিভিন্ন দাবি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় ২ ঘণ্টা ধরে ওই সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হন শিক্ষার্থী জোবায়ের। একদিন পর তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে জোবায়ের আমিনের দুই বন্ধু মো. সাইনান স্বচ্ছ (২১) ও মো. ইউসুফ আহম্মেদ জায়েদসহ (২১) অজ্ঞাত আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি হয়নি। কোনও আসামিও গ্রেফতার হয়নি। উদঘাটন হয়নি সেই রাতে আসলে কী ঘটেছিল।
হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত সাইনান স্বচ্ছ চিলমারী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হকের ছেলে হওয়ায় মামলাটির কোনও অগ্রগতি নেই দাবি করে নিহত জোবায়ের আমিনের বাবা আব্দুল জলিল আমিন বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, ‘ফরেনসিক রিপোর্টে এটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। দীর্ঘ একটি বছর পেরিয়ে গেছে, অথচ হত্যাকারীদের এখনও আইনের আওতায় নেওয়া হয়নি। এটি আমাদের জন্য কতটা কষ্টদায়ক তা বোঝানো যাবে না।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু সাইদ হোসেন পাখী, যুবদল নেতা তাইবুর রহমান, জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
এ ব্যাপারে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুর তদন্ত করছে।
পিবিআই রংপুরের পুলিশ পরিদর্শক আবু সায়েম বলেন, ‘মামলা তদন্ত অবস্থায় আছে। আমরা এখনও ফাইনালি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাইনি। আসামি এলাকায় নাই, আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।’

















