প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী, শ্যালিকা, ভাই, ভাতিজা সবাই একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তার বাবাও ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি। তার বন্ধুও ছিলেন সভাপতি। সেই বন্ধুর স্ত্রী, শ্যালিকা ও ভাগিনাও চাকরি করেন একই প্রতিষ্ঠানে। পুরো বিদ্যালয়টি পরিবারকেন্দ্রীক ও স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ প্রদানে বাধ্য করাসহ নানান অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার হালুয়াঘাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক (গণিত) আব্দুল মোত্তালেব।
যদিও প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এখানে সবাই নিজ যোগ্যতায় চাকরি করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মোত্তালেব অভিযোগ করেছেন, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর শিক্ষক এমপিওভুক্তি করার খরচ প্রদানের নাম ভেঙে প্রধান শিক্ষক তার কাছ থেকে জুলুম করে দুই লাখ টাকা নিয়ে এমপিও না করে নির্যাতন ও হয়রানি করছেন। এমপিওভুক্ত আবেদনে বিলম্ব ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে বাধা দেয়াসহ অন্য ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি ব্যানবেইস ও হাজিরা খাতায় অবৈধভাবে তথ্য সংযোজন-বিয়োজন, বারবার স্টাফ পরিবর্তনে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের করে বিল্ডিং, বাড়ি ও সম্পদ গড়েছেন।
নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো অনিয়ম করে চালানো হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্য জালিয়াতি করে স্টাফের এমপিও চালু করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক ব্যানবেইসে যখন ২০১৫-২০২১ পর্যন্ত আমার তথ্য উক্ত কারণে হালনাগাদ করেননি। অথচ হাজিরা বহিতে উপস্থিতির স্বাক্ষর আছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন এই প্রতিষ্ঠানে তার স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌসী বিউটিকে অফিস সহায়ক পদে, তার শ্যালিকা লাভলীকে আয়া পদে, তার ভাই আলমগীর কবিরকে নৈশ্যপ্রহরী পদে, তার ভাতিজা রাকিবকে নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তার বাবা কলিমুদ্দিন এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তার বন্ধু ফিরোজ কবির প্রিন্স ম্যানেজিং কমিটির সর্বশেষ সভাপতি ছিলেন। বন্ধুর স্ত্রী আজমিরী কামাল সহকারী শিক্ষিকা, তার শ্যালিকা ইফফাত আরা কামাল সহকারী শিক্ষিকা ও ভাগিনা শহিদুল ইসলাম অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে কর্মরত রয়েছেন।
পরিবারকেন্দ্রীক ও স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, টাকা আত্মসাতসহ যাবতীয় বিষয়গুলো উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলা হলে হালুয়াহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা এখানে চাকরি করছেন, তারা আমার পরিবারের সদস্য কিংবা স্বজন হলেও নিজ যোগ্যতায় চাকরি করছেন। এ বিষয়ে সব ধরনের কাগজপত্র আমার কাছে আছে। আমার বাবা সভাপতি ছিলেন এবং প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। আমার ভাতিজা জমিদাতা। আমার বন্ধু ফিরোজ কবির প্রিন্স। তার স্ত্রী ও শ্যালিকা শিক্ষিকা বলে স্বীকার করেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি আমি স্যারের সঙ্গে আছি পরে ফোন দেবো বলে তিনি ফোন কেটে দেন।