চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে শফিকুল ইসলাম ও সেলিম রেজা নামে দুই যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২ আগস্ট) বিকাল শিবগঞ্জ উপজেলার তারাপুর সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের ঠুঠাপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪২) ও একই গ্রামের মোহাম্মদ মুর্তুজার ছেলে সেলিম আলী (৩৪)।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকালে পদ্মা নদীর নারায়ণপুর ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে বাতাসমোড় এলাকা থেকে শফিকুলের ও দূলভপুর ইউনিয়নের দায়পাড়া এলাকা থেকে সেলিমের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত শফিকুল ও সেলিম পেশায় মৎস্যজীবী হলেও সীমান্তে চোরাচালানেও জড়িত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) তারা পদ্মা নদীপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের দাবি, তারা মাছ ধরতে গিয়েছিল।
শনিবার বিকালে স্থানীয়রা প্রথমে পদ্মা নদীতে শফিকুলের লাশ ভাসতে দেখেন এবং বিজিবিকে খবর দেন। পরে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে একই এলাকায় সেলিম রেজার লাশও ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহত শফিকুলের বোন জামাই ও মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সমীর উদ্দিন বলেন, তাদের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। শরীরজুড়ে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। কিছু দগ্ধ অংশ দেখে মনে হয়েছে অ্যাসিড বা রাসায়নিক কিছু দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। শফিকুলের দাঁতের অনেকগুলো ভেঙে গেছে। আমাদের ধারণা, ভারতের নিমতিতা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা নির্যাতন করে তাদের হত্যা করেছে এবং পরে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে।
৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জানার পর সীমান্তের ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, সীমান্তে কোনও ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি একেবারে সীমান্ত এলাকায় হওয়ায় পুলিশকে আমরা সহযোগিতা করেছি।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, সীমান্ত পিলার ৪/২ এস হলে আনুমানিক আড়াই কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পদ্মা নদীতে দুই জনের লাশ ভাসমান অবস্থায় বিজিবি সদস্যরা দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানালে তারা উদ্ধার করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য নিয়ে যায়। তবে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিজিবির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে, ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর কাজ করছে। ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

















