‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভিসি নিয়োগে ৮০ লাখ টাকা লেনদেন’—এই শিরোনামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহের অফিসিয়াল পেজে পোস্ট দেওয়া নিয়ে চলছে তোলপাড়। শনিবার (২ আগস্ট) রাতে এই পোস্টটি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ অফিসিয়াল পেজের পোস্টে বলা হয়েছে, এই টাকা নিলো কে? ভিসি নিয়োগে কে কে জড়িত? বাকৃবির ভিসি সমন্বয়কদের সহায়তায় নাকি নিয়োগপ্রাপ্ত। এই ঘটনায় তদন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, বাকৃবির ভিসি নিয়মিত বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে যাচ্ছেন। তিনি আগামী নির্বাচনে নমিনেশন পাওয়ার জন্য ক্যাম্পাসের সকল উন্নয়নকাজের টেন্ডার বিএনপি নেতাদের দিচ্ছেন। বর্তমান ভিসি আওয়ামী লীগের আমলের মতোই কাজ শুরু করেছেন। উনিও বিএনপি নেতা ছাড়া কাউকে টেন্ডারের কাজ দেন না। সাংবাদিকদের বলবো, আপনারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে এমন পোস্ট দেওয়ায় চলছে তোলপাড়। অনেকেই নানান ধরনের মন্তব্য করছেন।
বাকৃবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আজিজুল হক আজিজ তার ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, আমাকে এইখানে টানলেন কেন? ভিসি স্যারের বিরুদ্ধে যে বা যারা অভিযোগ করেছেন, তারা প্রমাণ দিয়ে যাবেন। এইসব আজগুবি মিথ্যা তথ্য দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন আপনারা? এসব বিষয়ে প্রমাণ দিতে না পারলে আপনারা মানুষের কাতারে পড়বেন না। এসব কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে দুদকে মামলা করেন।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে কী পোস্ট করেছে—এটা এখনও আমি দেখিনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান বলেন, ‘ভিসি নিয়োগে টাকা লেনদেনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এতে করে ওই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে শুনেছি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি কোটি টাকা নিয়ে ভিসি নিয়োগ করতো। হয়তোবা এরই ধারাবাহিকতা এখনও চলছে। এমনটাও হতে পারে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে বাকৃবির ভিসি অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে প্রক্টর ড. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিসি নিয়োগে টাকা লেনদেনের পোস্টের বিষয়টি আমাদের এখনও নজরে আসেনি। তবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এমন পোস্ট দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বর্তমান ভিসি স্যার যোগ্য একজন গবেষক এবং সৎ মানুষ। তার সততার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে যাচ্ছেন।’ তবে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।