রংপুরের গঙ্গাচড়ার হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার সাংবাদিক হাবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার দুপুর ১টার দিকে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় এ আদেশ দেন।
হাবিবুর রহমান সদর উপজেলার গোকুলপুর চওড়াপাড়ার বাসিন্দা ও রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক। রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাবিবুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসি আল এমরান বলেন, হাবিবুরকে আটক করে গত শনিবার রাতে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী। আলদাদপুরের ভাঙচুরের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। পরে এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
গত ২৬ জুলাই ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর ছয়আনি বালাপাড়া এলাকার এক হিন্দু কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় ছড়ালে উত্তেজনা দেখা দেয়। রাতেই ওই কিশোরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
পরদিন ২৭ জুলাই সাইবার সুরক্ষা আইনে করা মামলায় ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তবে ওই এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাশের জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগেরগাড়ি, মাগুড়া ও বাংলাবাজার এলাকা থেকে দফায় দফায় লোকজন মিছিল নিয়ে এসে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়। পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। এতে এক পুলিশ সদস্য আহতও হন। ভাঙচুর করা হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। ঘটনার তিন দিন পর ২৯ জুলাই আলদাদপুর ছয়আনি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে আসামি করে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় সবশেষ এক সাংবাদিকসহ এখন পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে; যারা কারাগারে আছেন।