গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড ও দেশব্যাপী সাংবাদিক নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সাংবাদিকদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আত্মপ্রকাশ করলো কুড়িগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেজিইউজে)। শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে জেলার দেড় শতাধিক সংবাদকর্মীদের নিয়ে ‘সাংবাদিক সম্মিলনের’ মাধ্যমে কেজিইউজে’র আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক ও প্রধান বক্তা ছিলেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল মান্নান। সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদা পারভীন, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, এনসিপির জেলা প্রধান সমন্বয়কারী মুকুল মিয়া, কুড়িগ্রাম পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিপ্লব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান খন্দকার, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক বাদশাহ ওসমানী ও ট্রেজারার মমিনুল ইসলাম রিপন।
বক্তারা বলেন, পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিত। কারও লেজুড়বৃত্তি কিংবা দলবাজি করে সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। সমাজের দর্পণ হিসেবে সব সঙ্গতি, অসঙ্গতি তুলে ধরাই সাংবাদিকদের কাজ। আর এই কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের নিপীড়িত হতে হয়। এমনকি জীবন দিতে হয়। সম্প্রতি গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরে সাংবাদিক হত্যা ও নিপীড়নে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
প্রধান আলোচক মাজহারুল মান্নান বলেন, ‘সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনও বিকল্প নেই। সম্প্রতি গাজীপুরে একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সাগর-রুনি হত্যাসহ বিগত সময়ে সাংবাদিক হত্যা ও নিপীড়নের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি। ফলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এমনকি জুলাই আন্দোলনে যেসব সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন তারও বিচার হয়নি। বিচার হলে এসব অপরাধ কমে আসতো। এজন্য সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা করার দাবি জানাই।’
আলোচনা শেষে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে আহ্বায়ক ও এটিএন নিউজের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটনকে সদস্যসচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরো জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে ইউনিয়নের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদ ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করা হয়।