ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পিটুনিতে আহত এক অটোরিকশাচালক মারা গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের নাম মো. ফাহিম (৩০)। তিনি উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের আলগীর চর গ্রামের বাসিন্দা। ওই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজীব হাসানের নেতৃত্বে ফাহিমকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও দুই কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- মানকোন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সজীব হাসান এবং দুই কর্মী আবির ও মারুফ। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মনজুরুল হক আরিফ ও সদস্যসচিব আসাদ ফরাজী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই তিন জনকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বোর্ডঘর মোড় এলাকার বাসিন্দা মজনু মিয়ার ছেলে ইয়াছিনের কাছে পার্শ্ববর্তী আলগীর চর গ্রামের মুদি দোকানদার রাসেল ৩৫০ টাকা বাকি পেতেন। এ নিয়ে মজনু মিয়া ও তার ছেলে ইয়াছিনের সঙ্গে রাসেলের কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে গত সোমবার দুপুরে দোকানদার রাসেলের পক্ষ হয়ে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজীব হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মানকোন বোর্ডঘর মোড়ে জড়ো হন। সেখানে মজনু মিয়া, তার ছেলে ইয়াছিন, ভাতিজা অটোরিকশাচালক ফাহিমকে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়। পরে ছাত্রদল নেতা সজীব ও তার সঙ্গীরা মজনু মিয়া, ইয়াছিন ও ফাহিমকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ফাহিমসহ অন্যদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে ফাহিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ফাহিমের মা রুবি আক্তার মুক্তাগাছা থানায় সজীবকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নামে হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোবারক হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজীব ও তার লোকজন অটোরিকশাচালক ফাহিমকে স্থানীয় স মিলের কাঠ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিলে সেখানে মৃত্যু হয়।’
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা সবাই পলাতক। তাই এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’

















