সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বুঝিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এ অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আশপাশের ১৫টি কারখানায় ছুটি দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, জুলাই মাসের বকেয়া বেতনের কারণে গত রবিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত নাসা গ্রুপের নিশ্চিন্তপুরের কারখানা চার দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ছুটি শেষে আজ সকালে কাজে যোগ দিতে গেলে তারা আগামী সোমবার পর্যন্ত আবার কারখানায় ছুটি ঘোষণার নোটিশ দেখতে পান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারখানা সংলগ্ন বাইপাইল থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের একটি অংশ আশপাশের কারখানার সামনে গিয়ে ওই সব কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় নাসার পাশের অনন্ত গার্মেন্টসের মূল ফটকে নিরাপত্তারক্ষীদের টেবিল, চেয়ারসহ অন্যান্য আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
অনন্ত গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক খান বলেন, ‘বিক্ষোভের সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমাদের কারখানার গেটে নিরাপত্তারক্ষীদের চেয়ার, টেবিল ও কম্পিউটার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সব ফ্যাক্টরি থেকে যখন শ্রমিকরা বের হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমাদের ফ্যাক্টরি থেকেও শ্রমিকের বের হচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় কারখানার বাইরে থাকা দুষ্কৃতকারীরা ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
নাসা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘এলসি এবং ব্যাংকিং জটিলতা, প্রতিষ্ঠানে কোনও কাজ না থাকার কারণে আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত ১০ মাস কষ্ট হলেও বিভিন্নভাবে কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। কোনও বেতন বকেয়া ছিল না। কিন্তু গত জুলাই মাসের বেতন গত ৭-১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। কাজ না থাকায় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে গত চার দিন কারখানা বন্ধ ছিল। আজ বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি সম্ভব হয়নি। তাই গতকাল আবার আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ছুটিসহ পরদিন বেতন দেওয়া হবে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়েছে।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধসহ শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত পূরণ করতে হবে। শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হলে এ শিল্পখাতে অস্থিতিশীলতা বাড়বে।’
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার শঙ্কায় ওই এলাকার আরও ১৫টি পোশাক কারখানায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন।’