চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পূর্বঘোষিত ‘জুলাই ৩৬: মুক্তির উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায়। এই উৎসবটি ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে এই উৎসবে জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেলের আসার কথা থাকলেও প্রস্তুতির শেষমুহূর্তে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তারা আসছে না বলে জানিয়েছে।
আর্টসেল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে, ‘অনিবার্য কারণে আমরা ১৫ আগস্টের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসার্টে অংশগ্রহণ করছি না।’
উৎসবের বিষয়ে জানতে চাইলে আয়োজক ও রাবির সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘৫ আগস্ট বা ৩৬ জুলাই সবার কাছেই একটি বিশেষ দিন। ছাত্র-জনতার এক চূড়ান্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের শেকল থেকে দেশের আপামর জনতা মুক্তি পেয়েছিল। বিজয়ের সেই দিনটিকে সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে আমরা এই বছরের ৫ আগস্ট একটি বড় আয়োজন করতে চেয়েছিলাম। কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সেদিন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। নতুন করে আজ সেটি আয়োজন করতে যাচ্ছি।’
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। ‘জুলাই ৩৬: মুক্তির উৎসব’ আয়োজনে থাকবে মুক্তির গান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, স্মৃতিচারণ ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং কনসার্ট। আয়োজনে নিরাপত্তার জন্য সবাইকে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়াও, কোনও মাদকদ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। মোবাইল ফোন ছাড়া আর কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনা যাবে না এবং কোনও প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র, দাহ্য পদার্থ সঙ্গে আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই আয়োজন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিনটিকে স্মরণীয় করে তুলবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের।
এর আগে, রাবিতে ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ নামের একটি সংগঠনের পরিচালক কে এস কে হৃদয়। অনুষ্ঠানটি ৫ আগস্ট হওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৭০টির অধিক প্রতিষ্ঠানে তারা দুজন ‘অর্গানাইজার: ৩৬ জুলাই, মুক্তির উৎসব’ পরিচয় ব্যবহার করে চিঠি পাঠান। তাদের এ আবেদনে ‘জোরালো সুপারিশ’ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব।
আবেদনের কয়েকটি অনুলিপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কেউ কেউ সমালোচনা করেন। আম্মারের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আর্থিক অনুদান ও সহযোগিতা চেয়ে ৭৬ লাখ টাকা ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ তোলেন তারা। তবে সে সময়, বড় একটি অনুষ্ঠানের জন্য ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকার অনুদানের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান আম্মার। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরে ১ আগস্ট (শুক্রবার) ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ কারণে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান সালাউদ্দিন আম্মার।