মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর ‘মিষ্টি বিতরণকারী’ আওয়ামী লীগ নেতা এ হাসান হিরণকে মিষ্টি খাইয়ে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন জামায়াত-শিবির ও স্থানীয় লোকজন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ হাসান হিরণ বালিপাড়া ইউনিয়ন আলিম মাদ্রাসার অফিস সহকারী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। রবিবার (১৭ আগস্ট) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইন্দুরকানীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। এ সময় বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ হাসান হিরণও মিষ্টি বিতরণ করেন। পরে আপিল বিভাগ সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। সেই দণ্ড ভোগ করার মধ্যে ২০২৩ সালে ১৪ আগস্ট মারা যান সাঈদী। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার সাউদখালী গ্রামে। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে পরপর দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন হিরণ। শনিবার রাতে ঘোষেরহাট বাজার এলাকায় তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন আটক করেন। সেখানে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন তাকে কৌশলে ডেকে মিষ্টির দোকানে নেন এবং মিষ্টি খাওয়ান। তখন তিনি একটি মিষ্টি খাওয়ার পর আর খেতে চাননি। পরে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আলী হোসেন বলেন, ‘সাঈদীর ফাঁসির রায়ে শুনে বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হিরণ তার এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন। শনিবার রাতে স্থানীয় লোকজন তাকে এলাকায় পেয়ে মিষ্টি খাইয়ে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।’
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘হিরণকে ঘোষেরহাট বাজার থেকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠানো হয়।’