বাইক স্টান্ট সবসময়ই তরুণদের কাছে রোমাঞ্চ, সাহস ও দক্ষতার প্রতীক। দিন দিন বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই মোটর বাইক স্টান্ট। এই অঙ্গনে বহুল পরিচিত ও আলোচিত মুখ গোল্লা, যার প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ আল মিয়াজি। তার সাহসী স্টান্ট ও চমকপ্রদ পারফরম্যান্স ইতোমধ্যেই বাইকপ্রেমীদের নজর কেড়েছে।
শৈশব থেকেই বাইকের প্রতি তার গভীর টান। শুরুটা হয়েছিল বাইসাইকেল দিয়ে স্টান্ট করার মাধ্যমে। পরে ধীরে ধীরে সেই আগ্রহ মোটরবাইকে রূপ নেয়। প্রথমদিকে ছিল কষ্টকর পথ—একটি পুরনো জীর্ণ বাইক দিয়েই প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। কোনো ট্রেইনার বা সহযোগিতা ছাড়াই শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমে তিনি গড়ে তোলেন দক্ষতা।
স্টান্ট দক্ষতা
উইলি, বার্নআউট, সার্কেল, ক্র্যাশ-ফ্রি ফ্লিপ, হাই-স্পিড ট্রিকসসহ নানা স্টান্টে পারদর্শী গোল্লা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন—
“বাইক স্টান্ট করার জন্য অনেক কষ্ট করেছি। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েছি। তারপরও থামিনি। মানুষ আমাকে দেখে ভাবতো আমি পাগল, কিন্তু তারা জানতো না যে বাইক স্টান্ট বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে একটি বড় খাত। আমি বিশ্বাস করি, পরিশ্রম ও ইচ্ছা থাকলে একদিন বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক স্টান্ট অঙ্গনে জায়গা করে নেবে।”
স্বতন্ত্র যাত্রা
বর্তমানে গোল্লা দেশের একমাত্র ফ্রী স্টাইল ইন্ডিপেন্ডেন্ট বাইক স্টান্ট রাইডার হিসেবে পরিচিত। শুধু নিজে স্টান্ট করেই থেমে নেই, তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতেও এগিয়ে এসেছেন তিনি। কোনো নির্দিষ্ট টিম বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত না থেকে স্বতন্ত্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় স্টান্ট শো ও র্যালির আয়োজন করছেন। যেখানে অসংখ্য বাইকার অংশগ্রহণ করে।
বাইকপ্রেমীদের চোখে অনুপ্রেরণা
বাইকপ্রেমীদের মতে, গোল্লা শুধু একজন স্টান্টারই নন, বরং তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। প্রতিদিনের নিয়মিত অনুশীলন ও শৃঙ্খলা তাকে আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছে।
যদিও বাংলাদেশে নিরাপদ পরিবেশ ও যথাযথ প্ল্যাটফর্মের অভাবে অনেক প্রতিভা হারিয়ে যাচ্ছে, তবুও গোল্লা আশাবাদী—নতুন প্রজন্মের বাইকাররা একদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।
গোল্লা বাংলাদেশের বাইক স্টান্ট জগতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। তার উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় ভবিষ্যতে এ খাত আরও এগিয়ে যাবে, এমনটাই আশা করছে বাইকপ্রেমী তরুণ সমাজ।