গাজীপুরে শিশুশিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমানকে (৫) হত্যার ঘটনায় প্রতিবেশী তরুণ বাবু ইসলামকে (২২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক অমিত কুমার দে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু ইসলাম দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার গুলিয়ারা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার আলীর ছেলে। তিনি জেলার জয়দেবপুর থানার বানিয়ারচালা এলাকার ইসমাইলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
নিহত শিশু আব্দুল্লাহ আল নোমান একই এলাকার হাজি মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিকালে শিশু আব্দুল্লাহ আল নোমান বাড়ির পাশে সহপাঠী সুমাইয়া ও সাদিয়ার সঙ্গে খেলা করছিল। এ সময় তাকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবু ইসলাম। সন্ধ্যার পর নোমান বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে খেলার সঙ্গী সুমাইয়া ও সাদিয়া জানায় খেলার মাঠ থেকে নোমানকে আসামি বাবু ইসলাম ডেকে নিয়ে গেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো পর জিজ্ঞাসাবাদে বাবু ইসলাম পুলিশের কাছে স্বীকার করে সে শিশু নোমানকে ওই দিন বিকালে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করে। পরে নিহতের লাশ একটি স্কুলব্যাগে ভরে গুম করার উদ্দেশ্যে মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন গাজীপুরা এলাকার হোপলান অ্যাপারেল লিমিটেড কারখানার পার্শ্ববর্তী ময়লার স্তূপে ফেলে রাখে।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ময়লার স্তূপ থেকে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বাবু ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ২০১ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীত ও সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাজা প্রদান করা হয়। আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারানুযায়ী আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ ছাড়াও দণ্ডবিধির ২০১ ধারা অনুযায়ী আদালত তাকে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ২ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। উভয় দণ্ড একত্রে চলবে বলে মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও আসামির হাজতবাসকালীন সময় (যদি থাকে) সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
মামলার অপর আসামি মজিবর রহমানের (৪৫) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এ মামলার অভিযোগের দায় থেকে খালাস প্রদান করা হয়।

















