দলীয় নীতি, আদর্শ ও সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিন বক্স-কে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে প্রেরিত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম মূয়ন ।
মতিন বক্সের বিরুদ্ধে বিএনপির হাই কমান্ডের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তারা বলছেন, বিএনপি যে গণমানুষের সংগঠন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার সংগঠন তা এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হলো।
প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রবেশদ্বারে মব সৃষ্টিকারী বিএনপি নেতা মতিন বক্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, কলেজ শিক্ষকদের হয়রানির প্রতিবাদ ও নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়।
শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দি ফ্লাওয়ার্স কেজি অ্যান্ড হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা মতিন বক্স দলীয় দাপটে আমাদের কলেজের শিক্ষকদের গালিগালাজ করে মারমুখি হয়ে দলবল নিয়ে তেড়ে আসেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে চরম খারাপ আচরণ করেন। তিনি ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে কলেজের প্রবেশদ্বারে মব সৃষ্টি করেন। এরপর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে শিক্ষকদের অশালীন মন্তব্য করে হেনেস্তা করেন। এতে শিক্ষক সমাজ যেমন অসম্মানিত হয়েছেন।
এদিকে মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে অপর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বিএনপি নেতা মতিন বক্স এর নেতৃত্বে মব সৃষ্টি করে হেনেস্তার অভিযোগে ১৭ আগস্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর কলেজ শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। ওই অভিযোগে বলা হয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা-২০২৫ পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের জন্য মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তারা কলেজে প্রবেশকালে তাদের গাড়ি ও রিকশা দি ফ্লাওয়ার্স কে জি অ্যান্ড হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা মতিন বক্সের নেতৃত্বে কতিপয় লোকজন ও অভিভাবক ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেন। তাদেরকে বহনকারী যানবাহন থেকে জোরপূর্বক নামতে বাধ্য করেন। একটি রিকশায় একজন অসুস্থ শিক্ষক ছিলেন। তাকেও জোরপূর্বক রিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশোভন আচরণ করে শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দকে উত্তেজিত করে মব সৃষ্টি করেন। এই ঘটনাটির বিনা অনুমতিতে ধারণ করা ভিডিওর খণ্ডিত অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়।