বগুড়ার ধুনটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে নিমগাছি ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সন্ত্রাসীদের মারধরের শিকার হয়েছেন। এ সময় মব সৃষ্টি করে আটকে রেখে মুচলেকা লেখা স্ট্যাম্পে তার সই নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বুধবার বিকালে উপজেলার পিরাপাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হচ্ছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার জয়শিং-বগুড়া সড়কের পিরাপাট বাজার এলাকায় সুকলু মিয়া ও তার ভাইদের সাড়ে ছয় শতক জমি ছিল। বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তা নির্মাণের জন্য গত ২০০৪ সালে জমিটি অধিগ্রহণ করে। সুকলু মিয়া অধিগ্রহণ করা ওই জমির মূল্য বাবদ ২০ হাজার ৬১৬ টাকা ৭৫ পয়সা উত্তোলন করেছেন। সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা অবশিষ্ট জমিতে সুকলু মিয়া ও তার সহযোগী শাহাদুল হোসেন মন্ডল, গোদা মন্ডল, আব্দুল কাফী, সফিকুল ইসলাম, ইংরেজ উদ্দিন ও কালুমিয়া অবৈধভাবে দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ করেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর পক্ষে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম প্রতিকার চেয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সড়কের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য সুকলু মিয়া ও তার সহযোগীদের নির্দেশ দেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে সড়কের জায়গায় আরও স্থাপনা নির্মাণ করেন। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিতে বুধবার নিমগাছি ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেন।
আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি বুধবার বিকাল ৪টার দিকে পিরাপাট বাজার এলাকায় গিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সুকলু ও তার সহযোগীসহ অন্তত ৪০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী মব সৃষ্টি করে তাকে ঘিরে ধরে। তাকে মারধর ও অবরুদ্ধ করে। এরপর ৩০০ টাকা মূল্যমানের সাদা স্ট্যাম্পে সই করে নেয়। প্রায় তিন ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ওসি সই নেওয়া স্ট্যাম্পটি জব্দ করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধুনট থানার ওসি জানান, তারা যাওয়ার আগেই ভূমি কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে মারপিট করা হয়নি; ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে। স্ট্যাম্পে লিখে নেওয়া মুচলেকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল জানান, একজন সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত ও জিম্মি করে স্ট্যাম্পে সই নেওয়া দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় মামলা করা হচ্ছে।

















