কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজে দীন ইসলাম নামে এক আইসিটি প্রভাষকের ওপর বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ এবং পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ চৌরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ওই শিক্ষক হামলার শিকার হন। দুপুর ২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধের ফলে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের সভাকক্ষে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোকেশনাল শাখার শিক্ষক মোবারক হোসেনের সঙ্গে একই কলেজের আইসিটি বিষয়ের প্রভাষক দীন ইসলামের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সভা শেষ করে মাঠে এলে একদল বহিরাগত প্রভাষক দীন ইসলামের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি আহত হন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষা বর্জন করে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা কলেজ থেকে বের হয়ে উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেন এবং দুপুর ২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষজন।
হামলার শিকার দীন ইসলাম বলেন, মিটিং শেষে নিচে নামতেই একদল লোক আমার ওপর হামলা চালায়। তারা আমার পরিচিত কেউ নয়। এর আগেও একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহির রায়হান। তখনও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজে প্রশাসনিক অস্থিরতা চলছে। প্রধান শিক্ষক ও কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে বারবার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এসব ঘটনা বারবার শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করছে। আমরা প্রধান শিক্ষক জহির রায়হান ও শিক্ষক মোবারক হোসেনের পদত্যাগ দাবি করছি। সেইসঙ্গে অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জহির রায়হান ও শিক্ষক মোবারক হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ করেননি।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহসী মাসনাদ এবং হোসেনপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত)। তারা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ইউএনওর আশ্বাসে সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সেইসঙ্গে যান চলাচল শুরু হয়।
ইউএনও কাজী নাহিদ ইভা বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহির রায়হানকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

















