রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও কবর থেকে মরদেহ তুলে নিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় নিরপরাধ কাউকে হয়রানি কিংবা গ্রেফতার করা হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘যিনি প্রকৃত অপরাধী, তাকেই গ্রেফতার করা হবে। যার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ বেরিয়ে আসবে, যার অপরাধ খুঁজে পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কেউ যদি প্রশাসনের লোক থাকে বা প্রশাসনের বাইরেও থাকে—কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে, ভিডিও ফুটেজসহ যেকোনো বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা, যেকোনো ধরনের ইনফরমেশন বিশ্লেষণ করে আমরা যখন নিশ্চিত হবো যিনি প্রকৃত অপরাধী তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।’
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ান মোল্লার পাড়ায় নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবার এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘আশা করি, জনগণকে সুবিচার দিতে পারবো। গণগ্রেফতার বলতে যা বোঝায়, ব্যাপারটা কিন্তু সেটা না, আইনকানুন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা জাস্টিস করবো। এ ধরনের ঘটনায় জনগণ ভাবতে পারে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হবে, ব্যাপারটা আসলে সেটা না—যারাই অপরাধী, তারাই আইনের আওতায় আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হতে পারে, সমাবেশে অশান্তি হতে পারে, কিন্তু সবাই জড়িত থাকে না। যারা আইনশৃঙ্খলা ভেঙেছে, তাদের আইনের আওতায় আনব। একটা সমাবেশে হাজার হাজার লোক থাকতে পারে, নাশকতা কিন্তু সবাই করে না। সবাইকে গ্রেফতার করা, সবাইকে আইনের আওতায় আনা—এটা আইনসম্মত না। এ ছাড়া আমরা সবকিছু নজরদারি করছি, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ ও প্রশাসনের লোক রয়েছে। তদন্তের পর সবকিছু জানানো হবে।’
গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় নুরাল পাগলার দরবার ও বাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা শরিয়ত পরিপন্থিভাবে দাফনের অভিযোগ তুলে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় নুরাল পাগলার দরবার ও বাড়ি। উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোকের এ হামলায় ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদসসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। পুলিশের দুটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আহত হয়ে মারা যান রাসেল নামের নুরাল পাগলার এক ভক্ত।