গাইবান্ধা করেসপনডেন্ট:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তবে দুই পাশে নেই কোনো ধরনের সংযোগ সড়ক। সেজন্য প্রতিদিন বাঁশের সাঁকোয় ভরসা করে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন হাজারো মানুষ, এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
এতে চরম ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর অভিযোগ—প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। এ জন্য ঠিকাদার ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন তারা।
পিআইও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৩৪ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। কিন্তু বাস্তবে সেতুর নির্মাণ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। এর মধ্যেই প্রায় ২৬ লাখ টাকা তোলা হয়।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, টেন্ডারে কাজ পেলেও প্রকৃতপক্ষে আইকন কনট্রাকশনের পরিবর্তে স্থানীয় ঠিকাদার গোলাম মওলাই কাজটি সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করেই প্রকল্প গুটিয়ে নিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকলেও দুই প্রান্তে গভীর গর্ত হয়ে থাকায় এটি সম্পূর্ণ অকেজো। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী পথ তৈরি করেছেন। কিন্তু সেটিও এখন নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও পারাপার কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।
ঘগোয়া গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য মজনু মিয়া বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় গ্রামবাসী মিলে বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী সংযোগ দিয়েছে। বহুবার বলার পরও ঠিকাদার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণ শেষে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। মানুষের দুর্ভোগের জন্য ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলাই দায়ী। দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।
এ বিষয়ে আইকন কনট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর শামিম বলেন, কাজটি মূলত পার্টনার হিসেবে গোলাম মওলাই করেছেন। সংযোগ সড়ক হয়নি বিষয়টি সম্প্রতি জেনেছি। দ্রুত মাটি দিয়ে সংযোগ তৈরি করা হবে।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা পিআইও মশিয়ার রহমানের সাথে অফিসে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে সেতু প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে সংক্ষেপে বলেন, আমার এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই, আপনারা ইউএনও’র কাছ থেকে বক্তব্য নিন। এরপর তিনি আর কোনো তথ্য না দিয়েই দ্রুত অফিস ত্যাগ করে বাসায় চলে যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেয়া হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
/এসআইএন