বরগুনার আমতলী উপজেলার ন ম ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা সব খাবার খেয়ে এবং নষ্ট করে ফেলেছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিবাড়ী ন ম ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজী এবং তাদের অনুসারীরা।
এ নিয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি ৪ সেপ্টেম্বর গঠন করা হয়। আমতলী সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. ফজলুল হককে কমিটির সভাপতি করা হয়। কমিটির প্রথম সভা গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। সভা উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৫০ জন আমন্ত্রিত অতিথির জন্য ওই দিন দুপুরে খাবারের আয়োজন করেন। কিন্তু সভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন গুলিশাখালী ইউনিয়ন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী এবং সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী এসে দাওয়াত না দেওয়ার কারণ জানতে চান। একপর্যায়ে তারা শিক্ষকদের গালাগাল করেন এবং অতিথিদের জন্য রান্না করা সব খাবার খেয়ে ফেলেন। অবশিষ্ট খাবারে টিস্যু, উচ্ছিষ্ট এবং নোংরা পানি ফেলে নষ্ট করে দিয়েছেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের হুমকি দিয়ে চলে যান তারা।
এ ঘটনার পর রিপন কাজী তার ফেসবুক আইডিতে ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘ন ম ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় পিকনিকের কিছু স্মৃতি।’ বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর নিন্দার ঝড় ওঠে। স্থানীয়রা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী বলেন, ‘মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তাই খাবার খেয়েছি, তবে খাবার নষ্ট করিনি।’
আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মৃধা এমন কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা এ ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’