কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর, প্রশ্ন উঠছে তবে কি ঘনিষ্ঠ এই আরব মিত্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল যুক্তরাষ্ট্র? ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার বিষয়ে জানতেন না দাবি করলেও, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর, হোয়াইট হাউসকে জানিয়েই হামলা চালিয়েছে তেলআবিব। এমন পরিস্থিতিতে, বিশ্লেষকরা বলছে, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ভরসা করা যায় কি না তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে আরবরা। যদিও, হামলার পর ওয়াশিংটনের সাথেই নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির করতে তৎপরতা চালাচ্ছে দোহা।
মূলত, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদের অবস্থান কাতারের রাজধানী দোহায়। বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধজাহাজ, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিয়টসহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামে সজ্জিত এই ঘাঁটি। এরপরও, কাতারে বিনা বাধায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ঘনিষ্ঠ আরব মিত্রকে রক্ষায় কোনো পদক্ষেপই নেয়নি মার্কিন প্রশাসন? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, হামলার বিষয়ে জানানোই হয়নি তাকে। যদিও, বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, হোয়াইট হাউসকে অবগত করেই অভিযান চালিয়েছে তেলআবিব।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অস্পষ্ট অবস্থানের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কাতারে হামলার পর, নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের ওপর কতটা ভরসা করা যায়, তা নিয়ে ভাববে অনেক আরব দেশই।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক মোনা ইয়াকুবিয়ান বলেন, ইসরায়েলের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে কাতারে। এরপরও ইসরায়েলের হামলার পর, স্বভাবতই নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের ওপর কতটা ভরসা করা যায় তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে তৎপরতা চালাচ্ছে কাতার। দোহায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারির মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা খাতে আমাদের সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরায়েলের এই হামলা নিশ্চিতভাবেই আমাদের মধ্যে কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনেছে। সমঝোতায় পৌঁছানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের হামলা ঠেকাতে না পারলেও, এর আগে আল উদেইদ ঘাঁটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইরানের হামলা ঠিকই ঠেকিয়ে দিয়েছিল মার্কিন সেনারা।
/এমএইচআর