কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলা বিএনপির দুই নেতা জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে জেলা ও উপজেলা জামায়াত নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগ দেন। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহজালাল সবুজ।
জামায়াতে যোগ দেওয়া রাজারহাট উপজেলা বিএনপি নেতার নাম রানা চৌধুরী এবং উলিপুর উপজেলা বিএনপি নেতার নাম আমিনুল ইসলাম ফুলু। রানা চৌধুরী রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ছাড়া তিনি উপজেলা ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য। আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তিনি কারাবরণ করেছিলেন।
আমিনুল ইসলাম ফুলু উলিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পরে তিনি পদত্যাগ করেন। আমিনুল উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। বিএনপির রাজনীতি করার কারণে ২০১৩ সালে এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে রাজারহাট উপজেলা শহরে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-২ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলী সরকারের উপস্থিতিতে রানা সরকার জামায়াতে ইসলামীতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। এ সময় দলটির উপজেলা আমির মাওলানা কফিল উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রানা চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে স্বেচ্ছায় জামায়াতে যোগ দিয়েছি। বিএনপির সব পর্যায় থেকে লিখিতভাবে ইস্তফা দিয়েছি। কারও প্রতি কোনও বিদ্বেষ কিংবা মনোমালিন্য থেকে বিএনপি বাদ দিইনি। নেতা হতে নয়, জেনে বুঝে ভালো লাগা থেকে জামায়াতে যোগ দিয়েছি। এখন থেকে জামায়াতের সঙ্গে থাকতে চাই।’
জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা কফিল উদ্দিন বলেন, ‘রানা চৌধুরী কয়েকদিন আগে জামায়াতে যোগদান করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আমরা তাকে আগে সেখান থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দিই। তিনি ইস্তফা দিয়ে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগ দেন।’
বিএনপির নেতৃত্বের জায়গা থেকে জামায়াতে নেতৃত্ব পাওয়া প্রশ্নের জবাবে মাওলানা কফিল উদ্দিন বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। জামায়াতে যোগ দিলেই নেতা হওয়া যায় না। এখানে কর্মী হতে হলে নিয়মিত নামাজ আদায়সহ সিলেবাসভুক্ত বই পড়তে হয়, ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখতে হয়। ব্যক্তিগত মানোন্নয়নসহ সাংগঠনিক নিয়মকানুন মেনে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। নেতৃত্বের যোগ্যতা তৈরি হলে তখনই নেতা হতে পারবেন, অন্যথায় নয়। রানা চৌধুরী সব জেনে বুঝে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান বলেন, ‘রানা চৌধুরী দুই দিন আগে দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে তার জামায়াতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
জামায়াতে যোগ দেওয়া উলিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা আমিনুল ইসলাম ফুলু বলেন, ‘মঙ্গলবার সমর্থক ফরম পূরণ করার মাধ্যমে জামায়াতে যোগ দিয়েছি। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে থাকলেও আমি লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র দিয়েছি।’
যোগদানকালে উপজেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট কামাল কবির লিটন, পৌর আমির মাওলানা মাহফুজুর রহমান ও জামায়াত নেতা মাসুদ বকসী উপস্থিত ছিলেন।