যশোর করেসপনডেন্ট:
যশোরের মনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত কুমার দাসকে। তার স্থানে নতুন প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে উপজেলা হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা কৌশিক ব্যানার্জিকে। পরিষদের সব ইউপি সদস্যের অনাস্থার ভিত্তিতে রনজিত দাসকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদে নতুন প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত অপর এক আদেশে রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদে সমবায় কর্মকর্তা রনজিত দাসকে প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না রনজিত দাসকে প্রশাসকের পদ থেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউপি সদস্যদের দেয়া অনাস্থার চিঠির ভিত্তিতে জানা গেছে, রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিন কারাগারে থাকায় জেলা প্রশাসকের আদেশ পেয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত দাস ওই পরিষদে প্রশাসক পদে যোগদান করেন। যোগদানের শুরু থেকে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ওঠে রনজিত দাসের বিরুদ্ধে। গ্রাম্য আদালতসহ পরিষদের কর্মকাণ্ডে ইউপি সদস্যদের মতামত নেয়ার বিধান থাকলেও রনজিত দাস মেম্বরদের মতামত না নিয়ে নিজের মত করে পরিষদ চালাতে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্যরা।
এতে করে প্রশাসকের সাথে ইউপি সদস্যদের দূরত্ব শুরু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্য বলেন, প্রশাসক সপ্তাহে দুদিন পরিষদে আসতেন। তিনি এসে আমাদের কারও সাথে কোন কথা না বলে নিজেরমত করে কাজ করতেন। তিনি আমাদেরকে সহকর্মী না ভেবে অফিসের কর্মচারীর মত আচরণ শুরু করেন। পরিষদে সরকারি কোন বরাদ্দ না থাকলেও প্রশাসক নিজের কক্ষ সাজাতে ১০ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। টাকা না পেয়ে আমাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন তিনি। প্রশাসকের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমরা ১২ জন ইউপি সদস্য গত ৪ সেপ্টেম্বর ইউএনওর মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন দিয়ে প্রশাসকের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছি।
এরপর বৃহস্পতিবার রনজিত দাসকে বাদ দিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা কৌশিক ব্যানার্জিকে রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে নিজের প্রত্যাহারের বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত দাস বলেন, ‘প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি ইউনিয়নের কোথাও আর্থিক কোন কাজ করাতে পারিনি। সবেমাত্র সেখানে গিয়েছি। কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণের আগেই আমাকে প্রত্যাহার করে নেয়াটা আমার জন্য অপমানের। আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’
মনিরামপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, ‘রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বররা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন। প্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিপত্রে বলা আছে কোথাও প্রশাসক নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে সেখানে নতুন প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে। সেই অনুযায়ী রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদে জেলা প্রশাসক মহোদয় নতুন করে উপজেলা হিসাবরক্ষক কর্মকর্তাকে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছেন। সমবায় কর্মকর্তা রনজিত দাসকে নতুন করে কোন ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।’
/এমএইচআর