স্টাফ করেসপনডেন্ট, মাদারীপুর:
মাদারীপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ডাকাত দলের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ডাকাতি হওয়া একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে জেলার রাজৈর থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) সালাহ উদ্দিন কাদের।
উদ্ধার হওয়া পিকআপটির মালিক খুলনার রুপসা উপজেলার শিরগাতি গ্রামের সরদার জাহাঙ্গীর আলম (৬২)। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় ফলের ব্যবসা করেন।
গ্রেফতার ডাকাতরা হলো, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার খাটরা গ্রামের শাহ আলম শেখ (৪০), একই উপজেলার পরারন গ্রামের কবির চোকদার (৪৫), সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের জাকির খাঁ (৫০), ভাঙ্গার কাউলীবেড়া গ্রামের ইকরাম আলী মুন্সী (৩৫), পাতরাইল গ্রামের হৃদয় বয়াতি (২৩), নগরকান্দা উপজেলার মীরাকান্দা গ্রামের সুমন হোসেন মাতুব্বর (২৬), ঢাকার কেরানীগঞ্জের পুরান পাঁচদোনা আল আমিন (৪৫), কেরানীগঞ্জের ঘাটার চর এলাকার হাবিব (২৫), নগরকান্দার ছোট নাওডোবার ইকবাল হোসেন (৩৬), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শংকরদী গ্রামের সুজন মাতুব্বর (২৭), কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুশ্বা গ্রামের সোহাগ ওরফে নোবেল (২৬), একই উপজেলার সাইটুটা গ্রামের ডালিম সরকার (৩০) ও একই গ্রামের স্বপন (২৫)।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খুলনার তেরখাদা থেকে তরমুজ নিয়ে মাদারীপুরের মস্তফাপুর ফলের আড়তে যাচ্ছিল একটি পিকআপ। পথিমধ্যে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ব্রিজ এলাকার গঙ্গাবর্দী স্থানে আসলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর থেকে চালক-হেলপারকে মারধর করে তরমুজ ভর্তি পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। ওইদিন রাতেই রাজৈর থানায় ডাকাতি মামলা করা হয়। পরেরদিন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে রাজৈর থানার পুলিশ।
এসময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্যমতে ভাঙ্গা, সদরপুর, নগরকান্দা, কেরানিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আরও ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। সেদিন রাতে ফের অভিযান চালিয়ে আরও ৫ ডাকাতসহ মোট ১৩ জন ডাকাত দলের সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই সঙ্গে তাদের তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে ডাকাতি করা পিকআপটি উদ্ধার করে। পরে রাজৈর থানা থেকে পিকআপ মালিককে খবর দেয়া হয়।
পিকআপ মালিক ও ফল ব্যবসায়ী সরদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ডাকাতি হওয়া পিকআপটি রাজৈর থানার পুলিশ অনেক কষ্ট করে উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে ডাকাত দলও গ্রেফতার হয়েছে। আমি রাজৈর থানা পুলিশকে দোয়া করি ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। গ্রেফতার হওয়া ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) সালাহ উদ্দিন কাদের বলেন, আমগ্রাম থেকে তরমুজ ভর্তি পিকআপ ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ধাপে ধাপে এই পর্যন্ত মোট ১৩ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি এবং তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পিকআপটিও উদ্ধার করেছি। এরা মূলত মহাসড়কে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এর আগে, ৮ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি এবং আজকে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ডাকাতি করা তরমুজগুলো ঢাকার যাত্রাবাড়ী নিয়ে বিক্রি করে দেয় ডাকাতরা। এরপর গাজীপুরের জয়দেবপুর নিয়ে পিকআপটি লুকিয়ে রাখে।
/এমএইচআর