ময়মনসিংহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেফতার সংস্কৃতিকর্মী শামীম আশরাফের (৩৮) একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুল হক এ আদেশ দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক পি এস এম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘ধর্ম অবমাননা ও সাইবার সুরক্ষা আইনের মামলায় শামীম আশরাফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল মঙ্গলবার বিকালে আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত গতকাল রিমান্ড শুনানি না করে আজ শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। শুনানি শেষে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিচারক।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত সোমবার রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শামীম আশরাফের বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন খেলাফত মজলিসের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইয়াসিন আরাফত। পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ধারায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।’
মামলার বাদী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘বেহেশত নিয়ে শামীম আশরাফের অবমাননাকর মন্তব্যে মুসলিম সমাজ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তার শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গত সোমবার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন শামীম আশরাফ। ওই পোস্টে একজনের মন্তব্যের জবাবে বেহেশত নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। সোমবার দুপুরে সেটি ছড়িয়ে পড়লে তাকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে অনেকে ফেসবুকে সরব হন। প্রতিবাদে দুপুরে বিক্ষোভ করেন একদল লোক। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান তারা। ওই দিন রাতে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দিয়ে শামীম লেখেন, ‘আমার যে কমেন্টটি মানুষকে ব্যথা দিয়েছে, সেজন্য ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’ পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরের আমলাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
‘গ্রাফিটি’ নামে একটি মুদ্রণশিল্পের ব্যবসা পরিচালনা করেন শামীম। পাশাপাশি ‘পরম্পরা’ নামের সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। আটকের পর তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালায় ডিবি পুলিশ। পরে রাতেই তাকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।