পাবনা শহরের হামিদ রোডের হোটেল রয়েল প্যালেসের একটি কক্ষ থেকে বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। পরে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির নাম স্বাধীন সর্দার ওরফে শ্রী সাধন কুমার সাহা (৪৭)।
ঘটনাটি জানাজানি হলে শুভ্র নামের শহরের এক ব্যক্তি দাবি করেন, মৃত ব্যক্তি তার ভায়রা। পরে পুলিশ তার সূত্র ধরে জানতে পারে মরদেহটি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার গান্ধাইল গ্রামের মৃত নিতাই চন্দ্র সাহার ছেলে সাধন কুমার সাহার।
তবে বিষয়টি জটিল রূপ নেয় যখন সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী শাহ জামাল থানায় এসে দাবি করেন, সাধন তার পালিত সন্তান এবং তিনি মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই মুসলমান ধর্মীয় রীতিতে মরদেহ দাফনের দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে, মৃত সাধনের স্ত্রী মাধবী রানী সরকার, মেয়ে তিথি সরকার এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী আত্মীয়রা হিন্দু রীতিতে সৎকারের দাবি জানান। ফলে পুলিশ পড়ে দোটানায়।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালামের নির্দেশে সিনিয়র ইনস্পেক্টর রায়হান উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় জানা যায়, সাধন কুমার সাহা জন্মসূত্রে হিন্দু হলেও ছোটবেলা থেকেই মুক্তিযোদ্ধা গাজী শাহ জামালের পরিবারের কাছে লালিত পালিত হন। শাহ জামালের কোনও ছেলে না থাকায় তিনি সাধনকে সন্তানস্নেহে বড় করেন।
বিগত কয়েক বছর আগে সাধন কাগজপত্রে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন বলে জানানো হয়। এ ঘটনায় পরিবার ও আত্মীয়দের মধ্যে তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। অনেকের ধারণা, ধর্মান্তরিত হওয়ায় পারিবারিক অশান্তিতেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
এক ঘণ্টা আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত স্ত্রী মাধবী রানী সরকার ও মেয়ে তিথি সরকার পালিত বাবা গাজী শাহ জামালের কাছে মরদেহ হস্তান্তরে সম্মতি দেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুসলমান ধর্মীয় রীতিতে জানাজা শেষে পাবনা শহরের আরিফপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় স্বাধীন সর্দার ওরফে শ্রী সাধন কুমার সাহাকে।