Swadhin News Logo
বৃহস্পতিবার , ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

বাঁধ ভাঙে বারবার, জোড়াতালির সংস্কার

প্রতিবেদক
Nirob
অক্টোবর ১৬, ২০২৫ ৮:০১ পূর্বাহ্ণ
বাঁধ ভাঙে বারবার, জোড়াতালির সংস্কার

খুলনার দাকোপ উপজেলার বেড়িবাঁধ নিয়ে এখনও আতঙ্ক কাটেনি উপকূলের বাসিন্দাদের। আবারও বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি ও ফলস তলিয়ে যেতে পারে—এমন আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন উপকূলের কয়েক লাখ বাসিন্দা। টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করা, বাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে বসতবাড়ি সরিয়ে না নেওয়া এবং জোড়াতালি দিয়ে বারবার মেরামত করায় সামনের বর্ষা কিংবা পূর্ণিমার জোয়ারে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা করছেন তারা।

৭ অক্টোবর রাতে দাকোপের তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া হরিসভা মন্দিরসংলগ্ন ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে বটবুনিয়া গ্রাম ও নিশানখালী বিলে পানি ঢুকে শত শত বিঘার আমন ধান ও অন্যান্য ফসল তলিয়ে গিয়েছিল। ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তিন দিন ধরে চেষ্টার পর বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢোকা কোনোমতে বন্ধ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যেটি টেকসই না হওয়ায় আবার ভাঙার শঙ্কা আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিয়ে দাকোপ উপজেলা। এর নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতায় পড়েছে পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন এবং চালনা পৌরসভা। বটবুনিয়া গ্রামে গত বছরও দুই জায়গায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে গত রাতের ভেঙে যাওয়া জায়গা ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় স্থানীয় লোকজন মাটি ও জিও বস্তা দিয়ে সেটা কোনোমতে টিকিয়ে রেখেছিলেন। ৭ অক্টোবর রাতে পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে মুহূর্তের মধ্যে মূল বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার ঢাকী নদীতে চলে যায়। এরপর জোয়ারের পানি হু হু করে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। পরদিন সকালের জোয়ারে আরেক দফা প্লাবিত হয়েছে এলাকা। শেষ পর্যন্ত ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ নদীতে চলে যায়। ৮ অক্টোবর থেকে চেষ্টা চালিয়ে ১০ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত বাঁধ জোড়াতালি দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। তার আগেই অনেকের ঘরবাড়ি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩০০ হেক্টর (প্রায় দুই হাজার ২৩১ বিঘা) জমির আমন প্লাবিত হয়েছিল। 

বারবার বাঁধ ভাঙায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা 

চার বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন বটবুনিয়া গ্রামের প্রকাশ বালা। হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘পানিতে ধানক্ষেত তলিয়ে ছিল দুদিন। অনেক গাছ পচে গেছে। এখনও লোকালয়ের পানি পুরোপুরি নামেনি। এবার আর ধান হবে না। বাঁধ ভাঙনের কাছাকাছি আমরা যারা, তাদের বড় রকমের ক্ষতি হয়ে গেছে।’

বাঁধ ভেঙে বটবুনিয়া গ্রাম ও নিশানখালী বিলে পানি ঢুকে শত শত বিঘার আমন ধান ও অন্যান্য ফসল তলিয়ে গিয়েছিল

অখিল সরদার বলেন, ‘আমার রন্নাঘর, থাকার ঘরের মেঝে, বাথরুম সব বালুতে ঢেকে গিয়েছিল। আমার ঘরের পেছনে কৃষ্ণপদ সরদার আর গৌতম ঢালীর জমির প্রচুর ধান পুরোটাই বালুর নিচে চলে যায়। গত মাঘে একবার ভাঙলো। ৭ অক্টোবর আবার ভাঙলো। সারা বছর এভাবেই চলছে। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। এখানে মজবুত বাঁধ দেওয়া ছাড়া আমাদের গতি নাই। বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা, দেখার কেউ নাই।’

একই গ্রামের বাসিন্দা অমল কৃষ্ণ গাইন বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও তদারকি নেই। তাদের গাফিলতির কারণে বারবার বাঁধ ভাঙে। আমাদের ক্ষতি হয়। বরাদ্দ ঠিকই হয় কিন্তু জায়গামতো তা পৌঁছায় না। যত দিন যাচ্ছে রাস্তাঘাট ভয়াবহ হয়ে যাচ্ছে। টেকসই বাঁধ না হলে আমরা এখানে টিকতে পারবো না।’

টেকসই বাঁধ চান উপকূলের লোকজন

বটবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন কুমার মন্ডল বলেন, ‘বর্তমানে পাউবো যে স্থানে বাঁধ দিয়েছে সেটি সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বসতি আছে। যেগুলো এখনও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। ফলে বাঁধের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া এখানে জোড়াতালির বাঁধ দেওয়ায় বারবার ভেঙে যাচ্ছে। আমরা এখানে টেকসই একটা বাঁধ চাই।’

বাঁধের পাশের বাসিন্দা ফুলমতি সরদার বলেন, ‘পাউবো এখন যেখানে বাঁধ নির্মাণ করছে তার পাশেই আমার বসতঘর। এটি মূলত সরকারি জায়গার ওপর। ঘরটি অন্যত্র সরিয়ে নেবো। এখানে টেকসই বাঁধ হলে আমার পরিবার বাঁচবে, ইউনিয়নবাসী রক্ষা পাবে। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল রক্ষা পাবে। আমরা মজবুত বাঁধ চাই। যাতে বারবার ভাঙনে আমাদের ক্ষতি না হয়। পাউবোর অবহেলায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না।’ 

স্থায়ী সমাধান চান জনপ্রতিনিধিরা

তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও বটবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘বাঁধের ভেঙে যাওয়া স্থানে বালু ও জিও টিউব দিয়ে পানি আটাকাতে সক্ষম হয় পাউবো। কিন্তু এটি টেকসই করতে বাঁধের ওপর মাটি ফেলা দরকার। কিন্তু আমন মৌসুম হওয়ায় কৃষিজমির মালিকরা এখন মাটি নিতে বাধা দিচ্ছেন। আমন ধান উঠে গেলে তারা জমি থেকে মাটি দিতে রাজি আছেন। এখন মাটি নিলে ধানের ক্ষতি হবে। কিন্তু ততদিনে সামনের অমাবস্যায় নদীর পানি বাড়লে কিংবা প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ আঘাত হানলে আবারও বাঁধটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে। এজন্য স্থায়ী সমাধান দরকার।’

তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন গাজী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাঁধটি টেকসই ও স্থায়ী করার জন্য আশপাশের জমির মালিকসহ সবাইকে সহযোগিতা করতে বলেছি। তবে বর্তমানে জমিতে আমন ফসল। দেড় থেকে দুই মাস পর ফসল ঘরে তুলবেন কৃষকরা। আমন ফসল উঠে গেলেই কৃষিজমি থেকে মাটি নিয়ে বাঁধ মজবুত করতে পারবে পাউবো। তবে জোড়াতালি বারবার বাঁধ না করার চেয়ে পাউবোর উচিত হবে, এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া। এটি হবে স্থায়ী সমাধান।’

ভাঙে বারবার, জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে ৩১ নম্বর পোল্ডারের কাজীবাছা, শিবসা, ঢাকী নদীর বিভিন্ন জায়গার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে কয়েকবার। গত বছরের মে মাসে বটবুনিয়া বাজারসংলগ্ন ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে পানখালী ইউনিয়নের খোনা গ্রামে পানি প্রবেশ করেছিল। এতে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়

পাউবো ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, ষাটের দশকে নির্মিত ৩১ নম্বর পোল্ডারের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। সারা বছরই জোড়াতালি দিয়ে কাজ চলে। মাঝেমধ্যে সেগুলো ভেঙে যায়। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে সেগুলো মেরামত করেন। তবে ৩১ নম্বর পোল্ডারে জাইকার অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৭৫০ মিটার স্থায়ী নদীশাসনের কাজ চলমান। এই পোল্ডারের টেকসই বাঁধ নির্মাণে মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠানো আছে। সেটা এখনও পাস হয়নি।

বাঁধ শক্তিশালী করার কাজ করছে পাউবো 

পাউবো বলছে, জিও টিউব দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। এখন সেখানে টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য মাটি প্রয়োজন। কিন্তু স্থানীয় জমির মালিকরা মাটি নিতে দিচ্ছেন না। পাশাপাশি বাঁধ সংলগ্ন সরকারি জায়গায় কয়েকটি ঘরবাড়ি রয়েছে। সেগুলো এখনও সরানো যায়নি। এজন্য বাঁধ নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা পানি উন্নয়ন বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আপাতত পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। এখন বাঁধ আরও শক্তিশালী করার কাজ চলছে। এ ছাড়া ভাঙনের ওই জায়গায় আরও কিছু দুর্বল অংশ আছে। এজন্য ৩৫০ মিটার রিং বাঁধ তৈরি করা হবে। বাঁধটি টেকসই করতে মাটি দরকার। সবাই সহযোগিতা করলে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা সহজ হবে। বাঁধের পাশে কিছু বসতি আছে। সেগুলো সরানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা।’

স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে আশরাফুল আলম বলেন, ‘এই পোল্ডারের জন্য দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে ২২ কিলোমিটার নদীশাসন, পুনর্বাসন এবং বাঁধ নির্মাণ করার এটি যদি অনুমোদন হয়, তাহলে এই পোল্ডারের যে সমস্যা আছে, তা সমাধান হবে।

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসমত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাঁধের পাশের বসতি সরানোর বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে পাউবো। আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত
টাঙ্গাইলে পাইপ ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, মানুষের ভোগান্তি

টাঙ্গাইলে পাইপ ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, মানুষের ভোগান্তি

৬১ ঘণ্টা পর কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

৬১ ঘণ্টা পর কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

গণবিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি ইয়াছিন, জিএস রায়হান

গণবিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি ইয়াছিন, জিএস রায়হান

কুকুরের তাড়া খেয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু

কুকুরের তাড়া খেয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু

রংপুরে গণপিটুনিতে দুইজন নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার ৪ জন রিমান্ডে

রংপুরে গণপিটুনিতে দুইজন নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার ৪ জন রিমান্ডে

উচ্চকক্ষের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও পদত্যাগ করবেন না জাপানের প্রধানমন্ত্রী

উচ্চকক্ষের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও পদত্যাগ করবেন না জাপানের প্রধানমন্ত্রী

লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে হত্যার অভিযোগে যুবক আটক

লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে হত্যার অভিযোগে যুবক আটক

রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ৩, অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ৩, অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ঘুষের অভিযোগে অভিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি

ঘুষের অভিযোগে অভিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি