উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ডেরা ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টেরে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি নাইম হোসেনকে (২১) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১২ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব-১২ এর সদরদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়। এর আগে, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে র্যাব-১২ ও র্যাব-১১ এর যৌথ অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার জিয়ারকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার করা নাইম হোসেন (২১) কামারখন্দ উপজেলার চর কামারখন্দ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১২ এর উপ-অধিনায়ক আহসান হাবিব বলেন, কিশোরী ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর থেকে নাইম পলাতক ছিল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর কুমিল্লা জেলার তিতাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আসামি গ্রেফতারের জন্য আমরা শুরু থেকেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। গ্রেফতার নাইমকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কামারখন্দ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কিশোরী কামারখন্দ উপজেলার একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে মাদ্রাসা থেকে কলম কেনার জন্য বাইরে বের হলে ওই কিশোরীকে ৫ থেকে ৬ জন যুবক জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায়। পরে জামতৈল বাজার এলাকায় ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে নিয়ে ধর্ষণ করে নাইম। কিশোরীর চিৎকার যেন বাইরে না যায় সেজন্য বাকি আসামিরা সাউন্ড বক্সে উচ্চ আওয়াজে গান বাজায়। একপর্যায়ে অসুস্থ হলে ধর্ষক ও তার বন্ধুরা হাসপাতালে নিয়ে সেখানে রেখে পালিয়ে যায়।
বিকালে মাদ্রাসা ছুটি হলেও বাড়িতে ফিরে না এলে তার পরিবার মাদ্রাসাসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও আশপাশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি পরিবারকে ফোন দিয়ে জানান, মেয়েটি সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। সংবাদ পেয়ে পরিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌঁছে আশঙ্কাজনক দেখতে পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় এম. মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে গত সোমবার সন্ধ্যায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক নাইম হোসেনকে (২১) প্রধান আসামি করে আরও ছয় জনের নামে মামলা করেন। এই মামলায় সোমবার (২০ অক্টোবর) গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলো- উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে আকাশ (২১), একই গ্রামের নান্নু সরকারের ছেলে আতিক (২৩) ও কর্ণসূতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২৩)। গ্রেফতার তিন জন এই মামলার এজাহার নামীয় আসামি।