বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- নগরীর রূপাতলী ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধান গবেষণা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় রাসেল, রাজিব ও জাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খোকন মামলার বিচার চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যায়।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা বলেন, ‘২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে নগরীর এক গৃহবধূ তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর অটোরিকশায় করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাচালক তাকে হাসপাতালে না নিয়ে ভুল পথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রিজের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে খ্রিষ্টানপাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে চার আসামি। পরদিন ভোরে একটি বাড়ির সামনে ফেলে যায়। সকালে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর চার জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন গৃহবধূ। তদন্ত শেষে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর আদালতে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে বিচারকাজ শুরু হয়। ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার রায় দেন বিচারক।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার অজিবর রহমান বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার চার আসামি অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিল। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। তবে তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সে আলোকে রায় দিয়েছেন বিচারক।’

















