গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় ৬৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা নারীকে ফাঁকা মাঠে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি আইয়ুব আলীকে (৪৫) ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকা আইয়ুব আলীকে রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে প্রযুক্তির সহায়তায় সাদুল্লাপুর থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে আটক করে।
গ্রেফতারকৃত আইয়ুব আলী উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে। পেশায় কৃষক এবং দুই সন্তানের জনক তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাজিব আহম্মেদ জানান, ঘটনার পর পালিয়ে গিয়ে আইয়ুব আলী ঢাকায় আত্মগোপন করে। তার অবস্থান শনাক্তের পর থানা পুলিশের একটি দল মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। রাতেই তাকে সড়ক পথে সাদুল্লাপুরে আনা হচ্ছে। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার আগে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে, গত ১৯ অক্টোবর দুপুরে আলীনগর গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে ছাগল আনতে যাওয়া ওই বৃদ্ধা নারীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় আইয়ুব আলী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে বাদী হয়ে সাদুল্লাপুর থানায় মামলা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ধাপেরহাট বন্দরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। এ সময় তারা রংপুর–ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব আহম্মেদের আশ্বাসে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। পুলিশের প্রতিশ্রুত সময়সীমার মধ্যেই অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এদিকে, ধর্ষণের দুই দিন পর আইয়ুব আলীর পরিবারের সদস্যদের হামলায় ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের লোকজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা অভিযুক্তের স্ত্রী মিনারা বেগম, ছেলে মিজানুর রহমান, মেহেদী হাসানসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই ঘটনায়ও মামলা দায়ের হলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই বৃদ্ধা নারীকে নির্যাতনের ঘটনার পর থেকেই জেলাজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছিল। একাধিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেফতার দাবি জানান।

















