চলতি বছরের ২৬ আগস্ট বিএনপি থেকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব দলীয় পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হলেও, মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে পেয়েছেন কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন। আর এমন ঘোষণার পরপরই নতুন করে আবারও আলোচনায় প্রবীণ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের হাওর অধ্যুষিত তিন উপজেলায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা।
তারা মনে করেন, এটি ফজলুর রহমানের আরেকটি বিজয়। সামনে আরও একটি বিজয়ের অপেক্ষা মাত্র। তারা সবসময় প্রিয় নেতার পাশে ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, ফজলুর রহমান একজন গণমানুষের নেতা, তার প্রতি এখানকার মানুষের আস্থা ও ভালবাসা রয়েছে। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে তার জয়ের মধ্য দিয়ে সেটি আবারও প্রমাণিত হবে।
তারা মনে করেন, তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, মুক্তিযুদ্ধের অবদান এবং স্থানীয় জনপ্রিয়তা বিবেচনায় নিয়েই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যদিও তার বিরুদ্ধে সাময়িক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তার অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তার কারণে দল হয়তো সব মেনে নিয়েছে।
ফজলুর রহমান কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার করণসি গ্রামের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন মুজিব বাহিনীর কিশোরগঞ্জ জেলার প্রধান। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও পরে বিএনপিতে যোগ দেন এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন ফজলুর রহমান। এরপরই শুরু হয়, নতুন করে আবার তাকে নিয়ে আলোচনা।
মিঠামইন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম বলেন, ফজলুর রহমান সাহেবের জনপ্রিয়তা এখনও অটুট। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পেছনে তার অনেক অবদান রয়েছে। তার বয়সও হয়েছে। বয়সের এই শেষ লগ্নে এসে তিনি যদি নিজ এলাকা থেকে নির্বাচন না করতে পারতেন সেটা হতো অনেক কষ্টকর। আমরা আজ খুবই খুশি ও আনন্দিত তিনি মনোনয়ন পাওয়ায়।
ইটনা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঠাকুর বলেন, আমরা প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। ওনারা একটি সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফজলু ভাইকে মনোনয়ন দেওয়ায় আমাদের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। আমরা শুধু এখন একটি বিজয়ের অপেক্ষায় রয়েছি। আর সেটিও গণ মানুষের বিপুল ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ করবো।
উল্লেখ্য টকশো ও সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন বক্তব্যের জেরে ২০২৫ সালের ২৬ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল দলীয় পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে।

















