ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র প্রদর্শনের দৃশ্য দেখা গেছে। এ ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবকের শোডাউনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি সমালোচনাও শুরু হয়েছে। পুলিশ বলছে, ওই যুবকের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহামুদুল হাসান বলেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি এবং খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় কোনও পক্ষ এখনও অভিযোগ করেনি।
এর আগে শুক্রবার বিকালে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরো উপজেলা শহর রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। উত্তেজিতদের হাতে দেখা যায় অস্ত্রের ঝনঝনানি। আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি চাইনিজ কুড়াল, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র ছিল চোখে পড়ার মতো।
জানা গেছে, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকদের মধ্যে রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা চলে আসছিল। দুই জনই আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন এবং কাউকে মনোনয়ন তালিকায় না রাখায় এবং উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে আরও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। যার ধারাবাহিকতায় সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ১৫টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া আশপাশের কমপক্ষে ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী সমর্থকেরা আহত হন।
সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত হয়ে শোডাউন দেন একটি পক্ষ। এ সময় সাংবাদিকদের ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবককে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে দেখা যায়। এ ছাড়া অনেকের হাতে রামদা ও চাইনিজ কুড়ালও দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শোডাউনটি করেন খন্দকার নাসিরুল ইসলামের কর্মী সমর্থকরা এবং আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবকের নাম শাহ মো. জাকারিয়া কাজী (২৫)। তিনি গুনবহা ইউনিয়নের উমরনগর গ্রামের মঞ্জুর কাজীর ছেলে এবং খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। এ ছাড়া তিনি উপজেলা জিয়া প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে। অপরদিকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তার আরও একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, সেই ছবিটি নিজেই ফটোশুট করেছেন।
এ বিষয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম দাবি করেন, সেটি আগ্নেয়াস্ত্র নয়। তিনি বলেন, ওই ভিডিওটি আমার সমর্থকদের রামদা কেড়ে নেওয়ার একটি দৃশ্য, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না (তবে তার এমন বক্তব্যর সাথে ভিডিওটির মিল নেই)। আর যদি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই থাকে পুলিশ সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। তিনি জানান, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বোয়ালমারীকে অশান্ত করে তুলেছেন। গতকাল তার দুই সমর্থকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। আগে থেকেই তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
















