গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কৃষক রুস্তম আলীর (৫৮) দেড় বিঘা জমির এক হাজার কলাগাছ রাতের আাঁধারে ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই কৃষকের প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ছয় জনের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
কাপাসিয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কৃষক রুস্তম আলী কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়নের টোকনগর গ্রামের মৃত শহর আলীর ছেলে।
অভিযুক্তরা হলো– কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার টোকনগর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শফিকুল ইসলাম কবির (৫০), একই গ্রামের সোহেল (৩৫), একই ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ চৌধুরীর ছেলে ইকবাল চৌধুরী (৫৫), কাশেঁরা গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে বাদল মিয়া (৫৫) এবং তাদের ৬ সহযোগী।
কৃষক রুস্তম আলী বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম কবিরের কাছ থেকে জমি কিনে ভোগদখল করে আসছেন। বিগত ৩-৪ বছর ধরে অভিযুক্তরা ওই জমি অর্ধেক দামে বিক্রি করার জন্য বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ সৃষ্টিসহ ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। আমার জমির সঠিক মূল্য দিয়ে ফেরত নিতে বললে মেম্বার রাজি হয়নি। উল্টো শফিকুল ইসলাম কবির বিভিন্ন লোকজনের কাছে বলে বেড়ায় যেকোনও সময় আমার জমির (কলাবাগানের) চারপাশে ইটের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দখলে নেবে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমি কলাবাগান দেখে বাড়িতে চলে আসি। শনিবার সকাল ৭টার দিকে জমিতে গিয়ে দেখি সবগুলো কলাগাছ কেটে ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুদে তিন লাখ টাকা নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে কলাগাছের বাগান করেছিলেন। এক হাজার কলাগাছের মধ্যে প্রায় ৭শ গাছের কলা পাকা শুরু হয়েছিল। আর এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে কলা তোলা যেত। দেড় বিঘা জমিতে কলাবাগান করতে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। এলাকার দোকান থেকে সার ও কীটনাশক বাকি নেওয়া হয়েছে। এখন সুদের টাকা ও দোকান বকেয়ার টাকা পরিশোধ করা নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছি।’ কলাবাগানে গিয়ে কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন কৃষক রুস্তম আলী। দীর্ঘদিন ধরে কলা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম কবিরের ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কাপাসিয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব বলেন, ‘ইতোমধ্যে পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কৃষকের সঙ্গে সমস্যা থাকতে পারে, তাই বলে গাছ কেটে দেওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

















