কক্সবাজারের উখিয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া ফাঁদে আটকে একটি পূর্ণবয়স্ক বুনোহাতির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম খয়রাতি রমজান আলী ঘোনা নামক এলাকায় কৃষিজমি থেকে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা মরদেহটি দেখতে পেয়ে ইউপি সদস্য সৈয়দ হামজাকে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি বন বিভাগকে খবর দেন। খবর পেয়ে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, দুছড়ি বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হক রনি এবং বন বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতিটির মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড়ি এলাকা ও জনবসতির সীমান্তে সাম্প্রতিক সময়ে বুনোহাতির চলাচল বেড়ে গেছে। এতে ফসল নষ্ট ও সম্পদের ক্ষতি হওয়ায় কিছু কৃষক অবৈধভাবে কারেন্টযুক্ত ফাঁদ ব্যবহার করছেন। এসব ফাঁদে প্রতিনিয়ত বন্যপ্রাণী ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
দুছড়ি বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হক রনি বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। কিন্তু ফসল নষ্ট হওয়ায় কিছু কৃষক কারেন্টযুক্ত ফাঁদ দিয়ে জমি ঘিরে রাখছেন। এতে হাতির মৃত্যু ঘটছে।’
ওই এলাকার পল্লী চিকিৎসক মো. ইউনুছ জানান, ধানক্ষেত ও কলাবাগান রক্ষায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখেন অনেকেই। এ ধরনের ফাঁদেই হাতির মৃত্যু ঘটছে।
বন বিভাগ মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত, সুরক্ষা এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতির বদলে নিরাপদ বিকল্প গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরে উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় মোট পাঁচটি বুনোহাতির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফে একটি মা হাতি, হ্নীলা বিট এলাকা ও জুমছড়িতে দুটি, দোছড়িতে একটি এবং সর্বশেষ উখিয়ার পশ্চিম খয়রাতিতে একটি হাতি মারা যায়।
পরিবেশ সাংবাদিক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলে বন্যহাতির মৃত্যু উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। খাদ্যের সংকট ও নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র রক্ষা না করলে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।’
















