প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ব্যারিস্টার গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া বলেছেন, ‘প্রবাসী কর্মীদের সমস্যাগুলো সমাধান এবং অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড নিয়মিতভাবে কাজ করছে। বিশেষ করে রেইজ (রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ইনফরমাল সেকটর এমপ্লয়মেন্ট) প্রকল্পের মাধ্যমে বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো হবে।’
বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক আর্থিক অনুদান, মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ, বকেয়া বেতন, চিকিৎসা সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি, প্রতিবন্ধী ভাতা ও বিমা সুবিধার চেক বিতরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রবাসী কর্মীরা বিদেশে পরিশ্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অধিকার রক্ষা এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি কল্যাণ বোর্ড সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন রেইজ প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রথম এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিইন্টিগ্রেশন প্রকল্প। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবাস ফেরত ২ লাখ ৫৩ হাজার কর্মীকে নিবন্ধন, ওরিয়েন্টেশন এবং কাউন্সেলিংসহ এককালীন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসফেরত কর্মীদের সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত সেবা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা হয়। এ লক্ষ্যে ৩৫টি প্রবাসী কল্যাণ সেন্টারের মাধ্যমে সারা দেশে প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া দক্ষ হয়ে ফেরত আসা কর্মীদের আরপিএল সনদ প্রদানের ব্যবস্থাও রয়েছে। মূলত কর্মীদের উদ্যোক্তা সৃষ্টি, প্রশিক্ষণ এবং আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করাই এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী এবং উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রকল্পের অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা, এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, সভায় চট্টগ্রাম জেলার সর্বমোট ১০৯ জনকে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৪৬ লাখ ১৬৯ টাকা এবং ফেনী জেলার ১১২ জনকে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার ৪২৬ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
এর মধ্যে চট্টগ্রামে আর্থিক অনুদান ৩১ জনকে ৩ লাখ টাকা করে মোট ৯৩ লাখ টাকা, জীবন বিমা ১০ জনকে ১০ লাখ টাকা করে ১ কোটি টাকা, বকেয়া ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ জনকে ১ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার ১৯৬ টাকা, প্রত্যাগত কর্মীর বিমা ৫ জনকে ৫০ হাজার করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী ভাতা ৩৩ জনকে ১২ হাজার করে ৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং শিক্ষাবৃত্তি ২০ জনকে ৩৪ হাজার টাকা করে মোট ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

















