কোনও ধরনের রস ছাড়াই তৈরি করা হচ্ছে ‘খেজুরের গুড়’। চিনি, চুন, কাপড়ের রঙ ও আটা দিয়ে তৈরি হচ্ছে আখ ও খেজুরের গুড়। খবর পেয়ে বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার শাহাপুর এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব।
এ সময় বিপুল পরিমাণ চিনি ও ভেজাল গুড় জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় একটি কারখানার মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করে রাজশাহী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
অধিদফতরের উপপরিচালক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে আরও কারখানায় অভিযান চালানো হবে। একইসঙ্গে ভেজাল গুড় জব্দ করে ধ্বংস করা হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আড়ানী পৌরসভার শাহাপুর এলাকায় গ্রামে গুড় তৈরির তিনটি কারখানা আছে। কারখানাগুলোতে আখ এবং খেজুরের রস ছাড়াই গুড় তৈরি করা হয়। কোনও কোনও কারখানায় দেখা গেছে, চুলার কড়ায়ে গুড় তৈরি হচ্ছে। তার পাশেই বিভিন্ন খাঁচের ওপর ফেলে দেওয়া হচ্ছে আকৃতি। তৈরি হওয়া গুড়গুলো পরবর্তীতে স্থানীয়সহ বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয়। এই এলাকায় গুড় তৈরি করেন নানটু মিয়া। তবে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়েছেন। তার স্ত্রী লাকি ভেজাল গুড়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘গুড়গুলো তৈরিতে কোনও ধরনের রস ব্যবহার করা হয় না। শুধু চিনি দিয়ে আখ ও খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়। এর মধ্যে মেশানো হয়, চিনি, কাপড়ের রঙ, আটা, হাইড্রোজ, গ্যাস পাউডার। এরপর এগুলো রাজশাহী, নাটোর, পাবনার বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হয়। সেগুলোতে বিভিন্ন দামে কেনাবেচা হয়।
র্যাব-৫-এর উপঅধিনায়ক মেজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এখানে যে গুড়গুলো রয়েছে সেখানে আখ বা খেজুরের রসের কোনও উপস্থিতি নেই। সবগুলো চিনি ও কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি। কারখানাগুলো প্রায় একটনের মতো গুড় রয়েছে। এইগুলো ধ্বংস করা হবে।’
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মুখপত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘রাসায়নিক দ্রব্য কোনোভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য কাজের নয়। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে, হতে পাড়ে ক্যানসার। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে।’













