চাঁদপুরে বাসচাপায় প্রাণ হারিয়েছেন ছয় বছর বয়সী শিশু মার্জিয়া এবং তার নানি নাজমা বেগম। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে শেরাটন হোটেলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু মার্জিয়া লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার বিগা ডালি গ্রামের প্রবাসী মানিকের একমাত্র মেয়ে। নানি নাজমা বেগম ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বড় হাজী বাড়ির মনির হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই নানি-নাতনিকে দ্রুত হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে পথেই মার্জিয়ার মৃত্যু হয়। পরে কুমিল্লা নেওয়ার পথে তার নানি মারা যান।
পদ্মা ট্রান্সপোর্টের ওই বাসের এক যাত্রী জানান, কুমিল্লা বিশ্বরোড থেকে যাত্রা শুরুর পর থেকেই চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পুরো পথজুড়ে যাত্রীদের সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক চলেছে। দুর্ঘটনার মুহূর্তেও দুই নারী ও একজন পুরুষ যাত্রীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত ছিলেন চালক। সেই সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা। উত্তেজিত জনতা বাসটি আটক করে এবং চালককে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
আটক বাসচালক শাহরাস্তি আলীপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমি মূলত সুপারভাইজার। ড্রাইভিং করার সময় অন্য মনোযোগে ছিলাম। নিহত শিশুটি বা তার নানিকে আমি দেখিনি।’
চালকের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি একজন সুপারভাইজার কীভাবে দায়িত্বশীল চালকের আসনে বসে শতাধিক যাত্রীর জীবন ঝুঁকিতে ফেলেন?
হাসপাতালে স্বজনদের আর্তনাদে চারপাশ স্তব্ধ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘বাস ও চালককে আমাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহ তদন্ত করা হবে। অবহেলা বা বেপরোয়া গতির কারণেই যদি এ প্রাণহানি ঘটে থাকে, আমরা আইনগত সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবো।’

















