মৃত্যুর আগে নিজের চোখ দান করে গেছেন সাবেক সেনাপ্রধান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হারুন-অর-রশীদ (৭৭)। সোমবার (৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম ক্লাবের ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুর খবর পেয়ে চট্টগ্রাম ক্লাবে ছুটে আসেন তার (এম হারুন-অর-রশীদ) ফুফাতো বোন ও চিকিৎসক ডা. নজিবুন নাহার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (হারুন-অর-রশীদ) মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, মৃত্যুর পর যাতে মানুষের জন্য তার চোখ দান করা হয়। তার মতো এমন সজ্জন মানুষ আর হয় না।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ বিকাল ৩টার দিকে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ক্যান্টনমেন্টে। তিনি মৃত্যুর আগে চোখ দানের বিষয়টি স্বজনদের বলে গেছেন বলে আমি শুনেছি। বিষয়টি কী হয় তা বলতে পারবো না।’
জানা গেছে, সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ ডেসটিনি গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ২০২৩ সালের এক মামলায় হাজিরা দিতে রবিবার (৩ আগস্ট) বিকালে ঢাকায় নিজ বাসা থেকে চট্টগ্রাম আসেন। বিকাল ৫টায় কাজির দেউড়ির চট্টগ্রাম ক্লাবে উঠেছিলেন তিনি। আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল আজ সোমবার বেলা ১১টায়। এর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের এমডি রফিকুল আমিন বলেন, ‘আজ সোমবার চট্টগ্রামের একটি মামলায় আদালতে হাজিরা ছিল। এজন্য আমাদের চট্টগ্রামে আসা। আদালতে নির্ধারিত সময়ে না যাওয়ায় তার মোবাইলে ফোন করা হলেও ধরেননি। এ কারণে ক্লাব কর্মকর্তারা রুমে গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন জানান, আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত দরজা না খোলায় কক্ষের পেছনের জানালা দিয়ে দেখা যায়, বিছানার ওপর তিনি নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন।
এম হারুন-অর-রশীদ বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত তিনি দেশের দশম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন।