স্টাফ করেসপনডেন্ট, নেত্রকোণা:
নেত্রকোণায় পূর্ববিরোধের জেরে বাসা থেকে ডেকে এনে মো. জাহাঙ্গীর আলম (২০) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের চল্লিশাকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম ওই এলাকার আলী উসমানের ছেলে। নেত্রকোনা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং একজন বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই মো. আলমগীর মুদির ব্যবসার দোকান রয়েছে। একই এলাকার রনি মিয়া (২০) ও অরঙ্গরাজ এলাকার তরিকুল ইসলাম (২১) আলমগীরের কাছ থেকে প্রায় ৪ হাজার টাকা ধার নেন। পাওনা টাকার টাকা চাইলে ওই দুই তরুণ সময় ক্ষেপন করেন। গত কয়েকদিন আগে শহরের কুড়পাড় এলাকায় রনি আহমেদ নামের এক যুবক ওই দুই যুবককে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে নিদৃষ্ট সময় বেধে দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার আলমগীর ও তার ভাই জাহাঙ্গীর ওই দুই যুবককে একত্রে পেয়ে তাদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করেন।
পরবর্তীতে, ওই দুই যুবক রনি আহমেদের কাছে নালিশ করলে শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে লোকজন নিয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে হাজির হন রনি। পরে জাহাঙ্গীরকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তাকে হকিস্টিক রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে ওই হাসপাতালে রাত ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর মারা যান।
জাহাঙ্গিরের বাবা উসমান আলী বলেন, আমার বড় ছেলে আলমগীর হোসেন রাকিবের পাওনা চার হাজার টাকা দেয়ার তাগাদা দেয়। এ কারণে আমার ছেলে রাকিবকে তিনদিন আগে মারধর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ছোট ছেলে জাহাঙ্গির ফেরাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করে। এ ঘটনার জেরে আবারও শুক্রবার রাতে আমার ছেলে জাহাঙ্গীরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রনি মিয়া, লিখন মিয়া, রাসেল মিয়া ও ফারুক মিয়াসহ কয়েকজন তাকে মারধর করে বাড়ির সামনে ফেলে যায়। আমরা খবর পেয়ে ময়মনসিংহ নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। হামলাকারীরা আমাকেও মেরে ফেলার হুমকী দেয়। এ সময় তিনি এর বিচার দাবি করেন। তবে অভিযুক্ত রনি মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
/এএইচএম