Swadhin News Logo
রবিবার , ২৪ আগস্ট ২০২৫ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. আন্তর্জাতিক
  3. কৃষি ও প্রকৃতি
  4. ক্যাম্পাস
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জোকস
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. ধর্ম
  12. নারী ও শিশু
  13. প্রবাস
  14. বই থেকে
  15. বিচিত্র নিউজ

শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’, অভিযোগ ইলিনয় গভর্নরের

প্রতিবেদক
Nirob
আগস্ট ২৪, ২০২৫ ৪:৪২ অপরাহ্ণ
শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’, অভিযোগ ইলিনয় গভর্নরের

শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’, অভিযোগ ইলিনয় গভর্নরের

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নর জেবি প্রিটজকার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ক্ষমতার গুরুতর অপব্যবহার।

এক বিবৃতিতে গভর্নর প্রিটজকার বলেন,

‘ইলিনয়ে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর মতো কোনো জরুরি অবস্থা নেই। প্রেসিডেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চাইছেন।’

এর আগে, ট্রাম্প রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-তে প্রায় ২ হাজার সেনা মোতায়েন করেছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ আগস্ট) ট্রাম্প ঘোষণা দেন, শিকাগো ও নিউইয়র্ক—এই দুই ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরেও একই নীতি কার্যকর করবেন। তিনি এটি যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে অপরাধ দমনের অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করছেন।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রেসিডেন্টের নেয়া এমন পদক্ষেপ রাজ্য সরকারগুলোর ক্ষমতার প্রতি হস্তক্ষেপের শামিল হতে পারে।

এদিকে, শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে বলেছেন, শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন সংক্রান্ত কোনো তথ্য তিনি পাননি।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,

‘শহরে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এটি অপরিকল্পিত, অপ্রয়োজনীয় এবং অনিরাপদ একটি পদক্ষেপ।’

তিনি সতর্ক করে বলেন,

‘এই অবৈধ সিদ্ধান্ত মোতায়েনকৃত গার্ড সদস্যদের সঙ্গে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং শহরে অপরাধ দমনে যে অগ্রগতি হয়েছে তা হুমকির মুখে ফেলতে পারে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ নির্দেশ দিয়েছেন, ওয়াশিংটন ডিসির রাস্তায় টহল দেয়া ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা যেন অস্ত্র বহন করে। এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের শহরটিতে ‘নিয়ন্ত্রণহীন অপরাধ’ দমনের চেষ্টার অংশ হিসেবে নেয়া হয়েছে।

অথচ, এক সপ্তাহ আগেই পেন্টাগন ও মার্কিন সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছিল যে, মোতায়েন করা প্রায় ২ হাজার সেনা সদস্য অস্ত্র বহন করবে না।

তবে পূর্বের বক্তব্য দ্রুত পরিবর্তন করে পেন্টাগন জানায়,

‘ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা শিগগিরই তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী ও প্রশিক্ষণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে অস্ত্র বহন করে দায়িত্ব পালন করবে।’

তবে, গার্ড সদস্যদের ভূমিকা পরিবর্তিত হচ্ছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এখন পর্যন্ত তারা কোনো সরাসরি আইন প্রয়োগ কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। স্থানীয় পুলিশ ও ফেডারেল এজেন্সির কর্মকর্তারাই আইন প্রয়োগ করছে। সেনা সদস্যদের অবস্থান মূলত ন্যাশনাল শপিং সেন্টার ও ইউনিয়ন স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আশেপাশে সীমাবদ্ধ।

এদিকে, ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বাউসার এখনো এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “ওয়াশিংটনে ডিসি একসময় অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনার হাব ছিল, কিন্তু এখন নিরাপদ।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, এই অভিযান সফল প্রমাণিত হওয়ায় সেটি শিকাগোতেও প্রসারিত হতে পারে—যেখানে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ।

পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে ১৯টি অঙ্গরাজ্যে প্রায় ১৭শ’ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করা হতে পারে বলে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি সেনা যাবে টেক্সাসে। গার্ড সদস্যরা ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের কার্যক্রমে সহায়তা করবে এবং দৃশ্যমান প্রতিরোধ বল হিসেবে কাজ করবে।

হোয়াইট হাউসের সফলতার দাবি সত্ত্বেও, একাধিক জরিপে দেখা গেছে এই গার্ড মোতায়েন পদক্ষেপের বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ওয়াশিংটনের বাসিন্দারা।

সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা ন্যাশনাল গার্ড ও ফেডারেল অফিসার মোতায়েন এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নেয়ার বিপক্ষে।

তবুও, ট্রাম্প জানিয়েছেন, যদি ৩০ দিনের মোতায়েন মেয়াদ শেষে পরিস্থিতি সন্তোষজনক না হয়, তাহলে তিনি ‘ন্যাশনাল ইমারজেন্সি’ ঘোষণা করতে পারেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন,

‘যদি মনে করি পরিস্থিতি ভালো নয়, তাহলে আমি ন্যাশনাল ইমারজেন্সি ঘোষণা করব। তখন আমি যতদিন ইচ্ছা, সেনা রাখতে পারবো।’

এদিকে, ওয়াশিংটন শহরকে ‘সুন্দর করার’ অজুহাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসের কাছে ২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭০০-এর বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও শুধু বৃহস্পতিবারই (২১ আগস্ট) গ্রেফতার হয়েছেন ৪০ জন। এ ছাড়া ৯১টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় কর্মকর্তারা আবারও প্রশ্ন তুলেছেন:

‘এই ফেডারেল হস্তক্ষেপ আদৌ প্রয়োজনীয় কি না, যখন শহরের সহিংস অপরাধ ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে?’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিরোধীদলের নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কতদিন এই গার্ড মোতায়েন কর্মসূচি চলবে, সেটিই এখন প্রশ্ন মার্কিন নাগরিকদের!

সূত্র: বিবিসি নিউজ।

/এআই

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক