গাজা সিটির সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের অন্তত ২৫ সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল স্থানীয় সময় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে।
সাবরা এলাকাটি দখল ও ধ্বংস করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত আগস্টের শেষে ওই এলাকার দিকে ইসরায়েলি ট্যাংক অগ্রসর হতে শুরু করে। আগস্টের শেষ দিকে সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক প্রবেশের পর থেকেই অঞ্চলটি ধ্বংস ও দখলের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
এক ফিলিস্তিনি পরিবার সাহায্যের জন্য জরুরি আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনও শব্দ শোনা যাচ্ছে।
একজন স্বজন বলেছিলেন:
‘আমি গোটা বিশ্বের কাছে অনুরোধ করছি—দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের আত্মীয়রা জীবন্ত কবর হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু পৌঁছাতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন,
‘প্রতিবার আমরা উদ্ধার করতে যাই, ইসরায়েলি ড্রোন আমাদের ওপর গুলি চালায়। পাঁচজনের একটি দল চেষ্টা করলে, তার মধ্যে চারজন নিহত হন, একজনই বেঁচে ফেরেন।’
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষজনের ঘেরা একটি ছোট গাড়িতে আহতদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আরেক ভিডিওতে এক মা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলছেন, ‘আমার সব সন্তান মরে গেছে’—এই ঘটনাটি ঘটেছে গাজার দক্ষিণের সাবরা পাড়ায়।
একই সময় গাজার পশ্চিমের শাতি শরণার্থী শিবির এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের তাল আল-হাওয়া এলাকাতেও তীব্র বিমান হামলা চালানো হয়। নাসর জেলার লাভাল টাওয়ার ও এর পাশে থাকা একটি বাড়িতেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে (গাজার কেন্দ্রে) আরেকটি হামলায় চার শিশুসহ সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এক জরুরি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ওই হামলাটি ইউএনআরডাব্লিউএ পরিচালিত একটি ক্লিনিকের কাছাকাছি হয়েছিল।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সি-এর উদ্ধৃত চিকিৎসা সূত্র অনুযায়ী, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার বিকেলে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে মোট ৬৫,২৮৩ জন নিহত এবং ১,৬৬,৫৭৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবারের মধ্যে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের কারণে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৪৭ জন শিশু সহ মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জন।
সূত্র: আল জাজিরা।
/এআই