একসময় ধারণা করা হতো ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সেই নরেন্দ্র মোদিকেই যেন এবার টার্গেট বানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য সম্পর্কসহ নানা অভিযোগে নয়াদিল্লির ওপর বর্ধিত শুল্কারোপ করেছে ওয়াশিংটন। দিয়েছে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও। এর আগে, পাকিস্তানের সাথে সংঘাত বন্ধের কৃতিত্ব নিয়ে ট্রাম্পের সাথে বাগযুদ্ধে জড়িয়েছিল মোদি প্রশাসন। প্রশ্ন উঠতেই পারে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারতের সাথে কি তলানিতে ঠেকেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক?
ভারত কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি— যতবারই এ দুটো নাম উচ্চারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ততবারই ‘ভালো বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তবে, কতটা ঘনিষ্ঠ মোদি-ট্রাম্পের সম্পর্ক?
এই প্রশ্নের জবাবটা মিলছে সাম্প্রতিক বাস্তবতায়। বন্ধু দাবি করলেও ভারতের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। তাতে প্রশ্ন উঠছে, আসলেই কি নয়াদিল্লিকে বন্ধু ভাবেন তিনি? নাকি এরইমধ্যে ফাটল ধরেছে দুই মিত্রের সম্পর্কে?
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থেমেছিলো ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। মার্কিন প্রেসিডেন্টই প্রথম দিয়েছিলেন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। বরাবরই এই সংঘাত বন্ধের কৃতিত্ব নিজের বলে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ইসলামাবাদ তা স্বীকার করলেও ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিতে রাজি নয় নয়াদিল্লি। তাদের দাবি, তৃতীয় কোনো দেশের হস্তক্ষেপ ছাড়াই থেমেছে প্রতিবেশি দুই দেশের লড়াই।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বন্ধের ইস্যুতে দুরত্ব তো বেড়েছেই, নরেন্দ্র মোদির দেশের ওপর আরও অনেক কারণেই নাখোশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া-ইরানের সাথে থাকা বাণিজ্য সম্পর্ক যার মধ্যে অন্যতম। ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সময়ও সেই ক্ষোভ লুকাননি তিনি। মস্কোর সাথে বাণিজ্য সম্পর্কের কারণে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইরানের সাথে ব্যবসা করায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ছয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস নিয়েও বেশ কয়েকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। রীতিমতো চীন-রাশিয়া-ভারত নেতৃত্বাধীন জোটটিকে হুমকি মনে করে ওয়াশিংটন। আর এই ব্রিকসের অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে ভারতকে বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি ভারতের বিরুদ্ধে মার্কিন পণ্যে মাত্রাতিরিক্ত শুল্কারোপের অভিযোগও তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে, এসব কারণেই তলানিতে ঠেকেছে নরেন্দ্র মোদির সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্পর্ক।
/এমএইচআর