রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রে (সাজেক ভ্যালি) শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রথমবারের মতো ৭২টি রিসোর্ট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স এবং অনুমোদিত নকশা দিয়েছে জেলা পরিষদ।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকালে জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে রিসোর্ট মালিকদের হাতে এ লাইসেন্স ও নকশা তুলে দেওয়া হয়। জেলা পরিষদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানান রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম, জেলা পরিষদের সদস্য মো. হাবিব আজম ও রিসোর্ট কটেজ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে আগুন লেগে ৩০টির বেশি রিসোর্ট-কটেজ পুড়ে যায়। এ অবস্থায় সেখানে যত্রতত্র রিসোর্ট নির্মাণে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত মার্চ মাসে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা পরিষদ। তখন বলা হয়েছিল, স্থাপনা নির্মাণে প্রাধান্য দিতে হবে স্থানীয় সংস্কৃতি, নিতে হবে নকশার অনুমোদন। অবশেষে জেলা পরিষদ রিসোর্ট মালিকদের জন্য লাইসেন্স ও নকশার অনুমোদন দিয়েছে। এ উদ্যোগ পর্যটনশিল্পের বিকাশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, আগে সরকারকে রাজস্ব দিয়েই আমরা ব্যবসা পরিচালনা করলেও কোনও লাইসেন্স ছিল না। এখন জেলা পরিষদ লাইসেন্স দিয়েছে। এতে আমাদের ব্যবসা পরিচালনায় সুবিধা হবে।
সাজেক রিসোর্ট কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুর্পন দেব বর্মণ বলেন, ‘গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৮টির মতো রিসোর্ট ও বাসাবাড়ি পুড়ে যায়। পরে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে নির্দেশনা দেয় জেলা পরিষদ। নতুন করে সাজেকে স্থাপনা নির্মাণে লাগছে নকশার অনুমোদন ও নিতে হয় লাইসেন্স। বিগত দিনে রাজস্ব দিয়ে ব্যবসা করেছি আমরা। এখন লাইসেন্স অনুমোদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরবে।’
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার বলেন, ‘পর্যটনের আয় দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ তাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে পর্যটন খাত উন্নত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। এই খাতকে কীভাবে উন্নত করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছি আমরা। সাজেকে যখন আগুন লাগলো তখন দেখেছি কতটা অসহায় সেখানকার মানুষজন। ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল নেই। বহু কষ্ট হয়েছে মানুষের। সাজেকের যত্রতত্র কটেজ বানিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়েছে। রাঙামাটি-আসাম-বস্তি সড়কে দেখছি নতুন কটেজ হচ্ছে। এটি উচিত নয়। সবকিছু বিবেচনা করে পর্যটনশিল্পে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছি আমরা।’
লাইসেন্স এবং অনুমোদিত নকশা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক বছরের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে সবকিছু বিবেচনা করে লাইসেন্স নবায়ন করা হবে। আর সেখানে শৃঙ্খলা ফেরাতে স্থাপনার নকশার অনুমোদন দিচ্ছি আমরা।’