Swadhin News Logo
শুক্রবার , ২২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. আন্তর্জাতিক
  3. কৃষি ও প্রকৃতি
  4. ক্যাম্পাস
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জোকস
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. ধর্ম
  12. নারী ও শিশু
  13. প্রবাস
  14. বই থেকে
  15. বিচিত্র নিউজ

বদলে যাচ্ছে বন্যার সময়, কৃষিতে বিরূপ প্রভাব

প্রতিবেদক
Nirob
আগস্ট ২২, ২০২৫ ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ
বদলে যাচ্ছে বন্যার সময়, কৃষিতে বিরূপ প্রভাব

‘বান হইলে যে ক্ষতি হয়, না হইলে আমগো তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। চরের জমিতে ছিটা ধান, কালাই আর আগাম বাদাম ফলান যায় না। এবার সময়মতো বান না হওয়ায় চরে এগুলা আবাদ করা যায় নাই। ধান না হইলে মাইনষের খাওনের কষ্ট হইবো।’ ভরা বর্ষা মৌসুমে সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর বন্যার দেখা না মেলায় চরাঞ্চলের মানুষের কৃষির ক্ষতি নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বাসিন্দা কৃষক মতিয়ার।

ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী চররাজিবপুর উপজেলার কৃষক নেতা শহিদুল ইসলাম। সময়মতো বন্যা না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চরাঞ্চ‌লে বন্যা স্বাভা‌বিক বিষয়। সময়মতো বন্যা না হলে আবাদ হয় না। পলির অভাবে জমির উর্বরতা থাকে না। আবার বিলম্ব বন্যায় ফস‌লের ব্যাপক ক্ষতি হয়।’

‘এবার জুন-জুলাইয়ে বন্যা না হওয়ায় রোপা আমন চাষে বিপাকে পড়ছি। যারা পাট আবাদ করছে, তারা পানির অভাবে জাগ দিতে পারতেছে না। আবার ভাদ্র-আশ্বিনে বন্যা হইলে ফসল নষ্ট হয়, খুব ক্ষতি হয়। তবে আমাদের কৃষির জন্য সময়মতো বন্যা লাগে’ বলেন শহিদুল।

সময়মতো মৌসুমি বন্যা না হওয়ায় কৃষক মতিয়ার ও শহিদুলের মতো হতাশ চরাঞ্চলের অনেক কৃষক। গত কয়েক বছর ধরে বন্যার সময় ও ধরনের পরিবর্তন কৃষিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে মত তাদের। তারা বলছেন, শুধু বন্যা নয়, বৃষ্টিপাতের পরিমাণেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

জলবায়ুর পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রভাব

কৃষি ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ছোঁয়া বাংলাদেশের বন্যার গতি-প্রকৃতির ওপর দৃশ্যমান প্রভাব ফেলছে। বন্যা ও বৃষ্টিপাতের পঞ্জিকায় পরিবর্তন এসেছে। গত কয়েক বছরে মৌসুমি বন্যার পরিবর্তে আকস্মিক বন্যার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিলম্ব বন্যায় চরাঞ্চ‌লের ধান ক্ষ‌তিগ্রস্ত হ‌লে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রবি ফসল গম, ভুট্টা, আলু ও ডালজাতীয় ফসল চাষ করার জন্য জ‌মি প্রস্তুত করতে হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুন মাসে কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রসহ প্রধান নদীগুলোর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ২০২৩ ও ২০২৪ সালের জুন-জুলাই মাসে জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে একাধিক দফায় বন্যা হয়।

পাউবোর তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জুলাই মাসে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে দেখা দেয় স্বল্প মেয়াদি বন্যা। সেসময় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও কাছাকাছি পৌঁছে। ২০২৪ সালে কুড়িগ্রামে তিন দফায় স্বল্প ও মাঝারি মানের বন্যা হয়। সে বছর জুলাইয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জুন-জুলাইয়ে দুই দফা বন্যা শেষে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ফের বন্যা আঘাত হানে। তিন দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষি ও মৎস্য খাত। বিশেষত ধান, পাট ও সবজির ক্ষতি হয়।

বৃষ্টিপাতের পরিমাণেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন

কিন্তু ২০২৫ সালে বন্যা পঞ্জিকায় আকস্মিক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। চলতি বছর জুন-জুলাই পেরিয়ে মধ্য আগস্টেও জেলায় বন্যার দেখা মেলেনি। নদ-নদীর পানিপ্রবাহ ছিল বিপদসীমার অনেকটাই নিচে। সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও বন্যা না হওয়ায় কৃষিতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। চরাঞ্চলে আমন ও পাট চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। শুধু বন্যা নয়, বৃষ্টিপাতের পরিমাণেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। 

পাউবোর তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে জুন মাসে ধরলা অববাহিকার কুড়িগ্রাম গেজ স্টেশনে বৃষ্টিপাত ছিল ৫১৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ছিল ১৪৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার। একই বছর জুনে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চিলমারী গেজ স্টেশনে মোট বৃষ্টিপাত ছিল ৫০০ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ২১২ মিলিমিটার। ২০২৪ সালের জুন মাসে কুড়িগ্রাম গেজ স্টেশনে বৃষ্টিপাত ছিল ১ হাজার ৯৮ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ৬১৬ দশমিক ১ মিলিমিটার। সে বছর জুনে চিলমারী গেজ স্টেশনে মোট বৃষ্টিপাত ছিল ৫১৩ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ৪০৫ মিলিমিটার।

তবে ২০২৫ সালে উভয় স্টেশনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এ বছর জুন মাসে কুড়িগ্রাম স্টেশনে মোট বৃষ্টিপাত ২৫৯ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ৩৯৬ দশমিক ৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আর চিলমারীতে জুনে ১৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার এবং জুলাইয়ে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। 

পাউবোর বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে মৌসুমি বন্যার স্থলে আকস্মিক বন্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও ধরনে পরিবর্তন এসেছে। প্রধান নদী অববাহিকায় বড় বন্যার জন্য কয়েক সপ্তাহজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। অল্প সময়ে অধিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এই পরিবর্তন আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কিনা, তা বুঝতে আরও কয়েক বছর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে হবে।’

নদী তীরবর্তী অঞ্চলের কৃষকরা বলছেন, বৃষ্টিপাতের পরিমাণের আকস্মিক পরিবর্তন কৃষিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর ফলে এ বছর তারা সময়মতো ধান ও অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকে পানির অভাবে সেচ দিয়ে জমি চাষ করছেন আবার কেউবা জমি পতিত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন।

বিশ্বজুড়ে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ায় আবহাওয়ায় পরিবর্তন

চাষাবাদের উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং মৌসুমি বন্যার সময়ে পরিবর্তন আসাকে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রভাব বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ায় আবহাওয়ায় পরিবর্তন এসেছে। ফলে বৃষ্টিপাত ও বন্যার সময়ে পরিবর্তন এসেছে। যার প্রভাব পড়ছে কৃষিতে।’

করণীয় কী? 

কৃষি ক্ষেত্রে ও কৃষকদের জন্য করণীর বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘কৃষিতে লেট ভ্যারাইটি বাছাই করতে হবে। লেট ভ্যারাইটি কিন্তু ফলন ভালো হবে এমন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। বন্যা সহনশীল জাত উদ্ভাবন করে কষকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই অঞ্চলের কৃষির সমস্যা নিয়ে গবেষণা করে কৃষির উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’

সময়মতো বন্যা না হলে পলির অভাবে কৃষির ক্ষতি হয় বলে জানালেন কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. মো. মামুনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আবার বিলম্ব বন্যাতেও কৃষির ক্ষতি হয়। সময়মতো বন্যা হওয়াটা জরুরি। তবে ঠিক দুই তিন বছরের পরিসংখ্যানে বন্যার সময় পরিবর্তন নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।’

‘বিলম্ব বন্যায় কৃষির অনেক ক্ষতি হয়। এ বছর জুলাই আগস্টে বন্যা হয়নি। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে কুড়িগ্রামে পাট চাষে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। আবার সেপ্টেম্বরে বন্যা হলে কৃষির মারাত্মক ক্ষতি হবে। আগে থেকে পূর্বাভাস পেলে কৃষকদের প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়। সেক্ষত্রে কৃষকরা বিকল্প হিসেবে উঁচু স্থানে আপদকালীন বীজতলা তৈরি করে রাখতে পারেন। আবার দোগাছি প্রস্তুত করে কিংবা অঙ্কুরিত ছিটা ধান রোপণ করেও ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেন’ বলে উল্লেখ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদি আরবের ‘স্লিপিং প্রিন্স’ আল ওয়ালিদ

২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদি আরবের ‘স্লিপিং প্রিন্স’ আল ওয়ালিদ

বাংলার মাটিতে শেখ হাসিনার বিচার হবে -মাসুদ সাঈদী

বাংলার মাটিতে শেখ হাসিনার বিচার হবে -মাসুদ সাঈদী

জামায়াত কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় আসতে পারবে না: গয়েশ্বর

জামায়াত কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় আসতে পারবে না: গয়েশ্বর

চায়না দোয়ারীতে সয়লাব পদ্মা নদী, হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ

চায়না দোয়ারীতে সয়লাব পদ্মা নদী, হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত

বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত

মহাসড়ক অবরোধে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

মহাসড়ক অবরোধে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে চতুর্মুখী বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে চতুর্মুখী বিক্ষোভ

টেকনাফে দুর্ভোগে অর্ধলাখ মানুষ, আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ

টেকনাফে দুর্ভোগে অর্ধলাখ মানুষ, আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ

২৬ দেশের নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় একদিনে নিহত ৭৩

২৬ দেশের নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় একদিনে নিহত ৭৩