সুনামগঞ্জের ‘হাওর কন্যা’ তাহিরপুরের মনোমুগ্ধকর পর্যটনকেন্দ্র টাঙ্গুয়ার হাওর। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসেন। ধান কাটা শেষে হাওরগুলো যখন পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন দল বেঁধে পর্যটকরা এখানে ঘুরে আসেন। ভ্রমণের জন্য রয়েছে অনেক এসি, ননএসি হাউসবোট। হাউসবোট ভাড়া নিয়ে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান। কিন্তু হঠাৎ করে সরকারি কাজে বিলাসবহুল হাউসবোট রিকুইজেশনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মালিকরা। অন্যদিকে পর্যটকদের কাছে ক্ষুণ্ন হচ্ছে হাউসবোটের সুনাম।
হাউসবোটের মালিকরা জানান, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি লেক, বারিক টিলা, যাদুকাটা নদী, লাকমাছড়াসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটকরা অনেক আগে থেকে বুকিং দিয়ে থাকেন বিলাসবহুল হাউসবোটগুলো। কিন্তু বোটগুলো সরকারি রিকুইজেশনের ফলে ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের দেওয়া ব্যবসায়িক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেন না। ফলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ট্যুর বাতিল করতে হয়। ফিরিয়ে দিতে হয় বুকিংমানি। পর্যটকরা নির্ধারিত সফর বাতিল করায় হয়রানিতে পড়েন। প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে হাউসবোট রিকুইজেশন করায় বোটের মালিকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
গ্রিন হ্যাভেন নামে হাউসবোটের মালিক হাসান আল বান্না বলেন, ‘এসি হাউস বোটগুলো রিকুইজেশন করা হয়, ননএসি হাউসবোটগুলো রিকুইজেশন করা হয় না। কোনও ধরনের ঘোষণা ছাড়া রিকুইজেশনের ফলে নির্ধারিত পর্যটকদের ট্যুর বাতিল হয়ে যায়। এতে তারা হয়রানিতে পড়েন। পাশাপাশি হাউসবোটের সুনাম ও সেবা ক্ষুণ্ন হয়।
হাউসবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আরাফাত হোসন আকন্দ বলেন, ‘সরকারি রিকুইজেশন নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। করোনা কালে কিছুটা সমস্য হয়েছিল। এখন সে সমস্যা নেই। কারণ রিকুইজেশনের গেস্টরা হাউসবোটের সমস্ত খরচ বহন করেন। এই রিকুইজেশন গাড়ি রিকুইজেশনের মতো নয়। শুধু জ্বালানি খরচ দিয়ে ছেড়ে দেয় না। গেস্টরা হাউস বোটের সব খরচ বহন করেন। আগে থেকে জানিয়ে বোট রিকুইজেশন করা হয়।’
সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল হাসান বলেন, ‘প্রশাসনের রিকুইজেশনের ফলে আপাতত কোনও সমস্যা হয়নি। প্রশাসন রিকুইজেশন নিলে হাউসবোটের সব খরচ বহন করে। এতে মালিকের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। তবে আগে থেকে জানিয়ে রিকুইজেশন করলে ভুল বোঝাবুঝি হতো না। হাউসবোটে ৬ জন মাঝিসহ ৮ জন লোক থাকেন পরিচালনার জন্য। হাউসবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের নিবন্ধন করা ২৩০টি বিলাসবহুল হাউসবোট রয়েছে।’
তিনি জানান, প্রতি বছর জুন মাস থেকে পর্যটকদের ট্রিপ শুরু হয়ে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চলে। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন। এ সময় পর্যটকের চাপ বেশি থাকে। তাই শুক্র শনিবার বাদ দিয়ে রিকুইজেশন করলে সবার জন্য ভালো হতো।

















