কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় জেলা যুবদলের দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দফতর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- জেলা যুবদলের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আলী আব্বাস ও সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় নীতি ও আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দুই নেতার প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলের সব ধরনের পদ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনও ধরনের অপকর্মের দায়ভার দল বহন করবে না। একইসঙ্গে তাদের সঙ্গে যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।
পাশাপাশি যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়ার সই করা আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি খশরুজ্জামান শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা যুবদলের কতিপয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরিচয়কে পুঁজি করে দলীয় নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ার একাধিক অভিযোগ যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আপনারা, যথাক্রমে জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার পরও এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিকে যথাসময়ে অবহিত না করে সংগঠনের শৃঙ্খলা বিনষ্টে ভূমিকা রেখেছেন বলে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি মনে করে। এমতাবস্থায়, আগামী সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সামনে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান বলেন, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিকে বিষয়টি জানিয়েছি। এরপর গতকাল রাতেই তাদের বহিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে আমাদের কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সশরীরে উপস্থিত হয়ে সাত দিনের মধ্যে আমরা সে ব্যাখ্যা দেবো।’
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাত জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই এলাকায় মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এতে ইমরানুল হক হিমেল নামের এক তরুণ নিহত হন। সংঘর্ষের জেরে অন্তত পাঁচটি বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

















