গাজীপুরের শ্রীপুরে তসরিফা ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেড পোশাক কারখানায় ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি ও কর্মকর্তাকে মাধরের অভিযোগে শ্রীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিবুল বেপারীসহ তার ২৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) ওই কারখানার প্রশাসন ও নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক (এজিএম) মহসিউল হাসান ভূঁইয়া আদনান বাদী হয়ে পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
এর আগে শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় রাজিবুল বেপারীসহ তার সহযোগীরা তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পোশাক কারখানায় প্রবেশ করে ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এ সময় বাধা দেওয়ায় তাদের হামলায় নিরাপত্তা বিভাগের আরও চার কর্মী আহত হয়। আহতরা হলেন- নিরাপত্তা সুপারভাইজার আরফান উদ্দিন (৪৮) ও টিপু সুলতান (৪৪), নিরাপত্তা অফিসার আব্দুল খালেক (৪৫), নিরাপত্তা প্রহরী (গার্ড) রনি মিয়া (২২)। আহতদেরকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কারখানাটি শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকায় অবিস্থিত।
মামলার বাদী মহসিউল হাসান ভূঁইয়া আদনান (৩৮) তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পোশাক কারখানার প্রশাসন ও নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক (এজিএম)। তিনি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার লোহাজুড়ী গ্রামের সোলায়মান ভূঁইয়ার ছেলে।
আসামিরা হলেন- শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকার মৃত তসলিম উদ্দিনের ছেলে শ্রীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিবুল বেপারী (৪০), মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৮), শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিফাত বেপারী (২৭) ও তার ভাই রকিবুল বেপারী (২৬) এবং সুলতান বেপারীর ছেলে আজাদ মাস্টারসহ (৪২) অজ্ঞাত ২০ জন। আসামিরা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মামলায় বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিরা বেশ কিছু দিন ধরে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে মাসিক ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। তাদের দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় কারখানার মালিকানাধীন উত্তর পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীরের পানির নালায় প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলে ভরাট করছে। এতে কারখানার উৎপাদন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে রাজিবুল বেপারী দুটি ভ্যান ভর্তি ময়লা পানির নালায় ফেলে। এ সময় মহসিউল হাসান ভূঁইয়া আদনানসহ কারখানার দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী তাকে মৌখিকভাবে বাধা দেন।
পরে বাধা অমান্য করে তাদেরকে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক পানির নালায় ময়লা ফেলে চলে যান। এ ঘটনার জেরে আধা ঘণ্টা পর দুপর দেড়টার দিকে আসামিরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা গেট সংলগ্ন খালি জায়গায় মহসিউল হাসান ভূঁইয়া আদনানকে পেয়ে লাঠি দিয়ে বাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি সরে গেলে তার বাম চোখে লেগে জখম হয়। অপর আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। তাকে রক্ষার জন্য নিরাপত্তা বিভাগের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে ও কিল, ঘুষি মেরে নিরাপত্তা সুপারভাইজার আরফান উদ্দিন ও টিপু সুলতান (৪৪), নিরাপত্তা অফিসার আব্দুল খালেক, নিরাপত্তা প্রহরী রনি মিয়াকে (২২) আহত করে। তাদের চিৎকার শুনে কারখানার অন্য কর্মচারীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জানতে শ্রীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিবুল বেপারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান খান মুন্না বলেন, মামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে চাঁদা দাবি করার মতো ছেলে সে (রাজিবুল বেপারী) না। আমির শুনেছি সে ফেরাতে গিয়েছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার এসআই সালেকুজ্জামান বলেন, এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং মামলাটি তদন্তাধীন আছে।

















