বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা জাসদের সদস্য সচিব এ কে এম মাহবুবার রহমান রুস্তমকে (৫৫) আদালতে চালান দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করার অভিযোগে নন্দীগ্রাম থানার ওসিসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি ও বগুড়ার পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত আদেশে তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, তাদের প্রত্যাহারের কারণ জানা নেই।
প্রত্যাহার করা কর্মকর্তারা হলেন- নন্দীগ্রাম থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু মুসা ও সেকেন্ড অফিসার এসআই নাজমুল হক। এর মধ্যে ওসিকে রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) সংযুক্ত, ইন্সপেক্টর আবু মুসাকে গাবতলী থানায় বদলি ও থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাজমুল হককে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা জাসদের সদস্য সচিব এ কে এম মাহবুবার রহমান রুস্তম উপজেলার সদর ইউনিয়নের দলগাছা গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে জাসদের সাবেক এমপি এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের ছোট ভাই ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) সমিতির সভাপতি। তিনি গত ২৪ আগস্ট সকালে সমিতিতে এলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে (রুস্তম) আটক করে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশে দেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার জানান, জাসদ নেতা এ কে এম মাহবুবার রহমান রুস্তম চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের কাছে টাকা নিয়েছেন। তিনি সমিতিতে এলে পাওনাদাররা হইচই করেন ও তাকে আটক করে পুলিশে দেন। কিন্তু নন্দীগ্রাম থানা পুলিশ তাকে আদালতে পাঠাতে গড়িমসি করেন। সকাল ১০টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হলেও চাপের মুখে রাত ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এ সময় প্রচারণা হয়, আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাকে (রুস্তম) থানায় অনেক সমাদর করা হয়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা থানায় গেলে পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়।
বিএনপির এ নেতা আরও জানান, নাশকতার মামলার আসামিকে থানায় সমাদর করার অভিযোগ উঠলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওসিসহ তিন কর্মকর্তাকে নন্দীগ্রাম থানা থেকে প্রত্যাহার করেছেন।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, এ কে এম মাহবুবার রহমান রুস্তমের নামে থানায় কোনও মামলা ছিল না। এক মামলায় রুস্তম আলী নামে একজনকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু বাবার নাম না মেলায় সময় লেগেছে। বাবার নাম ও আসামির নামের মিল না থাকার কারণে গ্রেফতার রুস্তমকে জানুয়ারিতে করা একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, জাসদ নেতা রুস্তমের গ্রেফতারের সঙ্গে নন্দীগ্রাম থানার ওসিসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের কোনও সম্পর্ক নেই। জনগণ যাতে ভালো সেবা পান সে জন্য থানা পুলিশকে পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে।

















