চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ সময় ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয়রা ইটপাটকেল মারা শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সময়মতো বাসায় আসি। আজকেও দেরি করিনি। ১২টার মধ্যে চলে আসি। দারোয়ানকে দরজা খুলতে বললে তিনি খুলছিলেন না। পরে জোরে ডাক দিলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। আমি জবাব দিতে গেলে হঠাৎ আমার গলায় চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমমেটরা নামলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি মারতে থাকেন। আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে আমার রুমমেট ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন।’
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্থানীয়দের হামলায় ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আল মাসনূন রয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক সাব্বির হোসেন বলেছেন, ‘মাসনূনকে কোপানো হয়েছে।’
রাত সোয়া ৩টার দিকে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে নেই। তবে যতটুকু জানতে পারলাম সহকারী প্রক্টর নাজমুল এবং কোরবান স্যার—দুজনই আহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা রওনা দিয়েছে।’
ভোর ৫টার দিকে দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা মেজর শাহরিয়ার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় দুই নম্বর গেটের ভেতর থেকে ১০ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছি। ভেতরে আমাদের আরেক গ্রুপ রয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সকালে আবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’